গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সামনে রেখে আরও একবার এক ছাতার তলায় এসেছে সমস্ত রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলি। শনিবার দিল্লির ছত্তরপুর মন্দিরে দুদিনের এক সম্মেলনে জড়ো হয়েছিলেন দার্জিলিংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং হামরো পার্টি-সহ মোট ১৯ টি রাজ্যের গোর্খা সম্প্রদায় সম্পর্কিত একাধিক অরাজনৈতিক সংগঠনও।দীর্ঘদিন পরে হলেও 'স্টেটহুড ডিমান্ড কো-অর্ডিনেশন কমিট'-র ব্যানারের তলায় এক মঞ্চে দেখা মিলল বিমল গুরুং, রোশন গিরি, বিনয় তামাং এবং হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ডদের। তাঁদের দাবি বা কর্মসূচি একটাই, গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সামনে রেখে নতুন করে আঞ্চলিক ও জাতীয় স্তরে সংগঠন মজবুত করা। আশ্চর্য হলেও এই সভায় উপস্থিত তৃণমূল বিধায়ক বিনয় তামাং।
advertisement
কালিম্পংয়ের এই বিধায়ক স্পষ্ট জানাচ্ছেন, গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে অনড় থাকছেন তিনি। ভবিষ্যতে কোনও এক পক্ষ বেছে নিতে হলে অবশ্যই গোর্খাল্যান্ড এর পক্ষ বেছে নেবেন তিনি। তাঁর কথায়, "আমি জানি, তৃণমূল কংগ্রেস কখনওই পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি মানবে না। কিন্তু, যদি এমন কোন সময় আসে যখন হয় গোর্খাল্যান্ডের দাবি নতুবা তৃণমূল কংগ্রেস বেছে নিতে হবে। তখন অবশ্যই গোর্খা ল্যান্ডের দাবি বেছে নেব।"
আরও পড়ুন- টেট বানচালের আশঙ্কা প্রকাশ পর্ষদ সভাপতির, সাংবাদিক বৈঠকে বিস্ফোরক কথা
নিউজ এইট্টিন বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বিমল গুরুং বললেন, "আপাতত এর মধ্যে রাজনীতি দেখবেন না। আমরা গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ছিলাম আছি থাকব। তবে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে এর প্রভাব পড়তে বাধ্য।" প্রায় একই বক্তব্য হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ডের। তাঁর কথায়, "কয়েক প্রজন্ম ধরে গোর্খারা পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি জানিয়ে আসছেন। বহু প্রাণ গিয়েছে এর জন্য। আমরা আর হানাহানি চাইছি না। সংবিধান মেনে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দাবি আদায়ে কোমর বেঁধে নামতে চাইছি আমরা। তাই পাহাড়ের সমস্ত রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক সংগঠন জোটবদ্ধ হচ্ছে।"
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং তারপর লোকসভা নির্বাচনের আগে পাহাড়ে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের সমর্থনে জেতা বেশ কয়েকজন বিধায়ক। রাজনৈতিক মহলের দাবি, এবার তৃণমূলের নতুন মাথাব্যথার কারণ হতে পারে পাহাড়। অন্তত দিল্লিতে আয়োজিত গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তরফে স্টেটহুড ডিমান্ড কো-অর্ডিনেশন কমিটি তেমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরও মনে করছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে গুরুংয়ের তৈরি এই মঞ্চ পাহাড়ে নির্ণায়ক শক্তি হতে চলেছে।