ক্রমেই কমছে সহিষ্ণুতা। বাড়ছে ভেদাভেদ। জাতের নামে ধর্মের নামে ভাগাভাগি। দেশ জুড়ে দাঙ্গা। হানাহানির খবর। কাঁপন ধরাচ্ছে শিরদাঁড়ায়। সাবধানে থাকবে তো সন্তানেরা? আশঙ্কায় সব বাঙালি মায়ের।এই পরিস্থিতিতে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবই হাতিয়ার। ধূপগুড়ির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দরবেশ পাড়ার।
ষাট জন মহিলা।কেউ মা। কেউ বোন। কেউ বা স্ত্রী-সন্তান। জাত ধর্মের পরিচয় ভিন্ন হলেই বা কি এসে যায়? আশঙ্কা একটাই। আমার আত্মীয় সুস্থ থাকবেন তো? আমার পরিজনের শরীরে হামলা চালাবে না তো দাঙ্গাবাজেরা? তাই সিদ্ধান্ত। এই শরতে সম্প্রীতির উপাসনা করবেন তাঁরা।
advertisement
আড়ম্বর, জাঁকজমক, থিম।কিছুই নেই।তেমন করে বললে বাজেটও নেই।আছে বিশ্বাস।ভাঙন আসতে দেব না সম্পর্কে। দশভূজা হয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হবে সম্প্রীতি।নিশ্চিহ্ন করতে হবে সাম্প্রদায়িকতা। এইটুকুই।এবারই প্রথম জলপাইগুড়িতে হরিজনের পাশে মুসলিম মায়েরা।তাঁদের হাত ধরে পাশাপাশি হিন্দু মায়েরা। সবাই একজোট। দশপ্রহরণধারিণী হয়ে।
সংসারের কাজে আর মন নেই ।হাতে সময়ও খুব কম।কেউ ব্যস্ত চাঁদা তুলতে। কেউ ছুটছেন ঢাক বায়না করতে।কেউ প্রতিমা অর্ডার দিচ্ছেন। কেউ গেছেন ডেকরেটর্স বাড়ি। কুড়িটি ঢাক নিয়ে শোভাযাত্রা করে খুঁটিপুজো হয়। সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে তোলা হচ্ছে চাঁদা।জোরকদমে চলছে মণ্ডপ তৈরির কাজ।
একই পাড়া। সুখে-দুঃখে সব্বাই একজোট। অন্যরকম কিছু ভাবাই হয়নি। তবে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় অস্বস্তি বেড়েছে। বেড়েছে আশঙ্কাও।কিছু করার নেই বলে হাত গুটিয়ে থাকা নয়। নিজেদেরকেই উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা। নিজেরাই দুর্গা হয়ে লড়ছেন।জিতছেন দরবেশপাড়ার ষাটজন দুর্গা।তাঁরা কেউ হিন্দু। কেউ মুসলিম। কেউ আবার হরিজন সম্প্রদায়ের।