আপনি যদি মানুষের কোলাহল থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে কোথাও অবসর কিছুটা কাটাতে চান তবে এই গ্রামটি উপযুক্ত জায়গা। জায়গাটির শুধুমাত্র রাস্তার প্রাকৃতিক দৃশ্যই আপনাকে উন্মত্ত করে তোলার জন্য যথেষ্ট। রাস্তার ধার দিয়ে চলে যাওয়া সবুজ চা বাগান, অর্কিড, ফুলের নার্সারি এবং প্রাচীন জলের ধারা আপনার রোজকার একঘেঁয়ে জীবনে প্রাণ সঞ্চার করে দেবে। গ্রামটি তার সিঙ্কোনা বাগানের জন্যও বিখ্যাত। যার ছালগুলি ম্যালেরিয়ার ওষুধ কুইনাইন (Quinine) তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। আপনি মংপুতে কুইনাইন কারখানায় গেলে ছাল থেকে কুইনাইন নিষ্কাশন প্রক্রিয়াও দেখতে পারবেন।
advertisement
আরও পড়ুন : পুজোয় বেড়িয়ে আসুন বীরভূম নলাটেশ্বরী মন্দির! এর নেপথ্যে রয়েছে বিশেষ পৌরাণিত কাহিনি
মংপুর স্কুলগুলিও দেখতে বেশ আকর্ষণীয়। এখানে মংপু অর্কিড পার্কে (Mungpoo Cymbidium Orchid Park) ১৫০টিরও বেশি প্রজাতির অর্কিড (orchid) পাওয়া যায়। আপনি যদি কিছু শান্তি এবং নির্জনতা খুঁজছেন, তাহলে স্থানীয় বাজার সংলগ্ন একটি পাহাড়ে অবস্থিত একটি বৌদ্ধবিহার দিনচেন শেরাপ ছোয়েলিং গুম্ফায় (Dinchen Sherap Choiling Gumpa, Mungpoo) ঘুরে আসতে পারেন।
আরও পড়ুন : নাগরিক জীবন থেকে দূরে আরণ্যক স্বাদ পেতে পুজোয় আসুন বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্যে
তিস্তা নদীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য ৫৫০ মিটার উচ্চতা থেকে যে অসাধারণ কালিঝোরা জলপ্রপাত পড়ে সেটির দেখতে ভুলবেন না যেন। মংপু (Mongpu) যে জন্য পরিচিত, সেই রবীন্দ্রভবন, তার পরিদর্শন না করে আপনি কীভাবেই বা চলে যেতে পারেন? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গ্রীষ্মকালীন বাড়ি বর্তমানে একটি সংগ্রহশালায় পরিণত হয়েছে ৷
- মংপু দেখার সেরা সময় : ভ্রমণকারীরা বছরের যে কোনও মাসে এই গ্রামে আসতে পারেন। মনোরম আবহাওয়ার কারণে এখানে পর্যটকরা সারাবছর ধরে ভিড় করেন। তবুও মংপু (Mongpu) দেখার সেরা সময় হল জুন মাস এবং তারপর আবার অক্টোবর (October) থেকে ডিসেম্বর (December) পর্যন্ত ।
- কোথায় থাকবেন : মংপু (Mongpu) গ্রামে কোন হোটেল এবং রিসোর্ট নেই। পর্যটকরা স্থানীয়দের দ্বারা পরিচালিত হোমস্টেতে (Homestay) থাকতে পারেন।
- কীভাবে পৌঁছাবেন : নিকটতম রেল স্টেশন নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি - NJP)। এখান থেকে সেবক দিয়ে কালিঝোরা (Kalijhora) হয়ে মংপু (Mongpu) প্রায় ৫২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আপনি প্রায় ২০০০ টাকায় একটি ছোট গাড়ি ভাড়া করে গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন। এনজেপি/শিলিগুড়ি থেকে মংপু পৌঁছতে প্রায় ২.৫ ঘন্টা সময় লাগে। নিকটতম বিমানবন্দর বাগডোগরা (Bagdogra Airport) ৷
প্রতিবেদন - ভাস্কর চক্রবর্তী