অনিলবাবুর কথায়, “প্রথমদিকে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে ধান-সরষা-সবজি চাষ করতাম। বছরে দু’তিনবার হাতির পালা এসে সব গিলে যেত। কৃষি দপ্তর থেকে তখন পরামর্শ এসেছিল, যেসব ফসল হাতি খায় না, সেগুলো লাগাতে হবে। তখনই শুনি, হাতি নাকি ড্রাগন ফল আর লেবুর গাছের কাছে আসে না।”
আরও পড়ুন: শীঘ্রই আসতে চলেছে যোজনার টাকা, কারা পাবেন না ২০তম কিস্তির টাকা ? জেনে নিন
advertisement
ফলে নিজের এক বিঘা জমি বেছে নিয়ে শুরু হয় ড্রাগন ফলের পরীক্ষামূলক চাষ। প্রথম দুই বছর ফলন খুব ভালো ছিল না, কিন্তু হাল ছাড়েননি অনিলবাবু। গত দু’বছরে ভাগ্য খুলতে শুরু করেছে — জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রতি কেজি ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়।
এই চাষের সবচেয়ে বড় দিক — জমিতে আর হাতির হানা নেই। অনিলবাবুর দেখাদেখি এখন চম্পাশাড়ির আরও বহু চাষি নতুন করে ড্রাগন ফলের বাগান তৈরি করছেন। কেউ কেউ মিশ্র চাষ করছেন লেবু আর ড্রাগন ফল একসাথে — যাতে হাতির ভয়ও দূর হয়, আর বাড়ে রোজগারও।
আরও পড়ুন: চাকরি করেন ? LIC-এর এই স্কিমগুলো আপনার জন্য সেরা, সুবিধাগুলি জেনে অবাক হবেন
তবে অনিলবাবুর কথায়, “ড্রাগন ফল চাষ করতে গেলে একটু নিয়ম মেনে চলতে হয়। জল যাতে গাছের গোড়ায় না জমে, সেজন্য মাটি উঁচু করে বেড বানাতে হয়। অনেকেই প্রথমে এইটুকু বুঝতে না পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তবে একবার পদ্ধতিটা শিখে গেলে আর সমস্যা হয় না।”
এখন চৌধুরী বস্তির প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ বিঘা জমি জুড়ে অনেক চাষিই ধীরে ধীরে এই নতুন ফসলের দিকে ঝুঁকছেন। শুরুর কষ্ট ভুলে অনিলবাবুর মুখে এখন শুধুই নতুন স্বপ্ন — “আগে ফসল বাঁচাতে দিনরাত পাহারাদারি করতে হতো, তবু কিছুই থাকত না। এখন হাতি আসে না, ফলনও হচ্ছে ভাল। আর গ্রামের লোকজনও একসাথে এগিয়ে আসছে — এটাই সবচেয়ে বড় লাভ।”
একটি লাল ফল আর এক চাষির অদম্য জেদের গল্প তাই চম্পাশাড়ির মাটিতে নতুন আশা বুনছে — যেখানে বন্য হাতিও হার মানছে মানুষের বুদ্ধি আর লড়াইয়ের কাছে।
ঋত্বিক ভট্টাচার্য