রবিবার আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে সরকারি পরিষেবা প্রদান কর্মসূচি অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে একাধিক সরকারি পরিষেবা তুলে দেওয়া হয় সাধারণ মানুষের হাতে৷ পাশাপাশি, চা শ্রমিক-সহ প্রায় ৬ হাজার মানুষকে জমির পাট্টাও দেওয়া হয় এদিন। তবে এই সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে, চা শ্রমিকদের জন্য মাসিক দেড় হাজার টাকা দেওয়ার সরকারি প্রতিশ্রুতির ঘোষণা৷ যাঁকে মমতার মাস্টার স্ট্রোক বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
advertisement
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আলিপুরদুয়ার থেকে মোট ২৬ হাজার মানুষকে জমির পাট্টা দেওয়া হবে। যার মধ্যে ৬ হাজার পাট্টা দেওয়া হয় এদিন৷ মমতার ঘোষণা, ‘‘চা সুন্দরী প্রকল্পে (বাড়ি) তো আমরা দিয়েছি। জমির পাট্টার সঙ্গে আমরা ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়ে দেব। এটা আমরা করব।’’
এরপরেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বলেন, ‘‘ভুটিয়া বস্তি যেটা আছে, সেই জায়গা থেকেও ওদের নিয়ে আসো। এখানে ওদের এস্টাব্লিশ করো..যে চা বাগানগুলো বন্ধ, তাদের শ্রমিকদের ১৫০০ টাকা করে দিয়ে দিও। এই মাস থেকে দিয়ে দাও। শ্রম দফতরের সচিবকে বলব।’’
জমির পাট্টা, বাড়ি তৈরির জন্য লক্ষাধিক টাকা থেকে শুরু করে নগদ ভাতা৷ চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ঘোষণাগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা৷ বিশেষত, এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন আলিপুরদুয়ার এসেছিলেন সেই সময় জানিয়ে গিয়েছিলেন চা বাগানের শ্রমিকদের জমির পাট্টা দেওয়া হবে। এদিন সেই প্রতিশ্রুতিই কার্যত পূরণ করলেন মমতা৷ এদিন আলিপুরদুয়ারের বন্ধ হয়ে যাওয়া ৬টি চা বাগান খোলার ব্যবস্থা করারও প্রতিশ্রুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী৷
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই পাহাড়ের জন্য একগুচ্ছ প্রকল্প ও কর্মসূচির কথা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্শিয়াং থেকেই জিটিএ-র জন্য একগুচ্ছ সুবিধার কথা ঘোষণা করেছেন। এবার নজরে উত্তরবঙ্গের আরও এক জেলা আলিপুরদুয়ার।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার থেকে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস পরাজিত হয়েছিল। যদিও ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য ভাল ফল করেছিল শাসকদল। কিন্তু, এবার ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে ২০১৯-এর ব্যর্থতা কাটিয়ে আরও ভাল ফল করতে চায় শাসকদল। কার্যত উত্তরবঙ্গই এবার টার্গেট খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।