জানা গিয়েছে, মৃত দুই মেয়ের নাম সুস্মিতা বর্মন ও রূপালী বর্মন। দু'জনেই নবম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন। মেখলিগঞ্জ হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি রয়েছে সুস্মিতা, রূপালীর দুই বোন সোনালী বর্মন, কৃষ্ণা বর্মন ও ভাই শুভজিত বর্মন।
কিন্তু হঠাৎ কী এমন হয়েছিল যাতে পরপর দু'দিনে একই পরিবারের দু'জনের মৃত্যু হয়? তিনজন অসুস্থ? কারণ হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অপুষ্টির কারণেই মৃত্যু হয়েছে দুই বোনের। অন্য দুই বোন ও ভাইয়ের অসুস্থতার কারণও, পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব। প্রতিবেশীরা জানান, এই পরিবারের সদস্যরা প্রায়ই অসুখে ভুগতেন। অর্থিক দুরবস্থার কারনে ঠিকমতো চিকিৎসা করানোরও সাধ্য ছিল না!
advertisement
তবে, হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এ'বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সুস্মিতার হার্টের সমস্যা ছিল। রূপালীর ঠিক কী সমস্যা ছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়! তবে, পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্য দুই বোন ও ভাইয়ের শরীরে পুষ্টির ঘাটতি রয়েছে।
দুই মেয়ের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন বাবা বিজয় বর্মন। মাস ছয়েক আগেই তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। সেই শোক কাটতে না কাটতেই, চলে গেল দুই মেয়ে! প্রায় বাকরুদ্ধ বিজয়বাবু। তারউপর নিত্যসঙ্গী অভাব! নিজস্ব জমি জায়গা বলতে কিচ্ছু নেই। বসতভিটেটুকুও অন্যের জায়গায়। তিনি, স্ত্রী ও মা--তিনজনই দিনমজুরি খেটে কোনওক্রমে সংসার চালান।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বেশ কিছুদিন থেকেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিল সুস্মিতা। শনিবার তাকে চিকিৎসার জন্য মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখতে বললেও পরিবারের লোকেরা বাড়ি নিয়ে আসেন। সেদিন বিকেলেই মৃত্যু হয় সুস্মিতার। পরের দিন অসুস্থ অবস্থায় আরেক বোন রূপালীকেও হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি না করে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়। মৃত্যু হয় রূপালীরও! রূপালীর মৃত্যুর পর ঘটনাটি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় পাড়ায়।
স্থানীয় কাউন্সিলর দিপক রায় জানান, ''ওই পরিবারের অপুষ্টিজনিত একটা সমস্যা রয়েছে। আর্থিক দিক দিয়েও ওঁরা দুর্বল। ঘটনাটি সত্যিই খুব দুঃখজনক।''