গত মঙ্গলবার কেপিপি এবং আদিবাসীদের থানায় স্মারকলিপি জমা করা নিয়ে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে কালিয়াগঞ্জ। কালিয়াগঞ্জ থানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। চলে রবার বুলেট, ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের সেল। গুলি চালানোরও অভিযোগ উঠেছে।
আবার পালটা আন্দোলনকারীরা চড়াও হয় পুলিশের ওপর। ঘরে ঢুকে পুলিশ কর্মীদের ওপর বেপরোয়া হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এমনই হিংস্র আন্দোলনের হাত থেকে কোনওক্রমে বেঁচে ফিরেছেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। নাম তাঁর মিজানুর রহমান। বর্তমানে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।
advertisement
কী হয়েছিল মঙ্গলবার? প্রশ্ন করতেই মিজানুরের চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কিছুতেই যেন ভুলতে পারছেন না ৷ শিলিগুড়িতে বেসরকারি হাসপাতালের বেডে শুয়ে। যা বললেন তা শুনে রীতিমতো গা শিউরে উঠবে। মিজানুর বলছিলেন, কোনওক্রমে বেঁচে ফিরেছি। কী হয়েছিল? মিজানুর জানায়, ‘‘আমরা তখন থানার ৩ নং গেটে ডিউটি করছিলাম। ১ নং গেটে বড় সাহেবেরা ছিলেন। আন্দোলনকারীরা থানামুখী। বৃষ্টির মতো পাথর, ইঁট পড়ছে। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় থানায়। ৩ নং থেকে ২ নং গেটে আসার মতো পরিস্থিতি ছিল না। পুলিশকে তাড়া করছে আন্দোলনকারীরা। থানার পাশেই একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয় মিজানুর-সহ অন্য কয়েকজন পুলিশ কর্মী। রক্ষে হয়নি। আন্দোলনকারীরা ওই বাড়িতেও চড়াও হয়। ছোট্ট একটি ঘরে কয়েকজন পুলিশ কর্মী। জানালা ভেঙে কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পুলিশদের দিকে ছুঁড়ে দেয় আন্দোলনকারীরা।
তারপর টেনেহিঁচড়ে জানালা দিয়ে বের করে মিজানুরকে। হেলমেট পরা ছিল বলে মাথায় চোট লাগেনি। বাঁশ, লাঠিসোটা নিয়ে চলে হামলা। দৌড়তে গেলে পড়ে যান রাস্তায়। তারপরও চলে বেপরোয়া মারধোর। হিংস্র আন্দোলন চলে। ওখান থেকে স্থানীয় এক বাসিন্দার বাইকে চেপে কালিয়াগঞ্জ, রায়গঞ্জ হাসপাতাল হয়ে এখন শিলিগুড়িতে মিজানুর। কিছুতেই ভুলতে পারছেন না আতঙ্কের মূহূর্তগুলি।