একসময় ভারত বাংলাদেশের মানুষ একসাথে এই পুজোর আয়োজন করতেন । এখন বিএসএফ ও বিজিবির নিষেধে বাংলাদেশ সীমান্ত গ্রামের বাসিন্দারা পুজোতে আসার সুযোগ পান না । কিন্তু এপাড়ের প্রসাদ পৌছে যায় কাটাতারের বেড়ার ফাক গলে । পুজোর দিনে ধর্মীয় বিশ্বাসের কাছে মাথা নত করতে হয় সীমান্তের নিয়মকে ।
রাসপূর্নিমাতে বাংলাদেশ সীমান্তে কাটাতারের ওপাড়ে শুরু হয় মা মনসার পুজো । পুজোর উদ্বোধন করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ । ছিলেন বিএসএফ এর চেংমারি বিওপির আধিকারিকরা । মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন , এই পুজোতে প্রায় পনেরো বছর আগেও বাংলাদেশ সীমান্ত গ্রামের বাসিন্দারা আসতেন । এখন সীমান্তের নিয়মে তা সম্ভব না হলেও এপাড়ের প্রসাদ চলে যায় ওপাড়ে ।
advertisement
চেংমারি বিওপি সুত্রে খবর আগে সারাবছর নির্দিষ্ট সময় ছাড়া কাটাতারের গেট খোলা হয়না । তবে পুজোর দিনে এই গেট খোলা থাকে । কাটাতারের গেট খোলা থাকলেও ওপাড়ের বাংলাদেশের মুল ভুখন্ডে যাতে কেউ যেতে না পারেন তাই বাশ ও লোহার তার দিয়ে জিরো পয়েন্টে বানানো হয় অস্থায়ী বেড়া । সীমান্ত ঘেষে ভারতীয় জমিতে বসে মেলা । সীমান্তের এই মেলাতে চলে বিকিকিনি । উতসবের আমেজে ভাসে সীমান্তের গ্রাম । পুজো উদোক্তা ফনীন্দ্র নাথ বর্মন বলেন , চাঁদ সদাগর তার সপ্তডিঙা নিয়ে যখন বাংলাদেশের দিকে যাচ্ছিলেন তখন মা মনসার কোপে এখানেই একটি ডিঙা দুবে যায় ।এখন অবশ্য কোনো নদীর ছাপ নেই । তবে বহুবছর আগে একটি ডিঙির মত মাটির ঢিবি উচু হয়েছিল। এরপরেই সেই ঢিবিতে শুরু হয় মা মনসার পুজো ।
এপাড়ে কোচবিহারের তুফানগঞ্জের কৃষ্ণপুর গ্রাম ।আর কাটাতারের ওপাড়ে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার ধলডাঙা । জমিতে কৃষিকাজ করে দিন গুজরান হয় দুপাড়ের । দুদেশের বাসিন্দাদের মধ্যে একসময় ছিল নিবিড় সম্পর্ক । তবে কাটাতারের বেড়া জমি দুভাগে ভাগ করে দিলেও প্রতিবছর চাঁদসদাগরের ডিঙা ও মা মনসার পুজো উপলক্ষে সীমান্তের কাছে আসার সুযোগ পান তারা । তাই ফি বছর তারা অপেক্ষায় থাকেন এই পুজোর ।
আরও দেখুন