মাঠ ফেটে চৌচির, চাষের জমিতে নেই জলের ছোঁয়া। ধান বোনা তো দূরের কথা, পাটও পচাতে পারছেন না কৃষকরা। আকাশের দিকে তাকিয়ে দিন গুনছেন উত্তরবঙ্গের হাজারও কৃষক। এই জলসংকট ও খরার মুখে প্রাচীন লোকবিশ্বাসের আশ্রয় নিলেন ধূপগুড়ির বারঘরিয়া অঞ্চলের ভেমমটিয়া এলাকার বাসিন্দারা—বৃষ্টির জন্য আয়োজন করা হল ব্যাঙের বিয়ে।
advertisement
লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, অনাবৃষ্টির সময় ব্যাঙের বিয়ে দিলে বরুণ দেবতা সন্তুষ্ট হন এবং মেঘে জলভর্তি করে বৃষ্টি নামান। সেই বিশ্বাস থেকেই এদিন এলাকার মানুষজন ধুমধাম করে আয়োজন করেন দুটি ব্যাঙের বিবাহ। ছিল জলভরা কলসি, বাজনা, গায়ে হলুদ, সিঁদুরদান—সব কিছুই একেবারে মানুষের বিয়ের মতোই।
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হতেই আয়োজন করা হয় বৌভাত। খিচুড়ি, তরকারি, পায়েস-সহ নানা খাদ্যে সাজানো হয় পাতা, আর তাতে ভোজ সারেন প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ। এই বিশেষ আয়োজনে গান, নাচ, আচার-অনুষ্ঠান মিলিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয় গোটা এলাকায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ব্যাঙের ডাককে বৃষ্টির আগমনী বার্তা বলে মনে করা হয়। অতীতে, ফসলহানির আশঙ্কায় এমন রীতির চর্চা বহু এলাকায় হয়ে এসেছে। ব্যাঙকে কোথাও সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবেও মানা হয়।
এলাকাবাসীদের বিশ্বাস, এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রকৃতির প্রতিক্রিয়ায় বৃষ্টি নামবে এবং তাতে কৃষিকাজে নতুন প্রাণ ফিরে আসবে। সব মিলিয়ে এই লোকাচার, লোকবিশ্বাস আর প্রার্থনার মধ্য দিয়ে ভেমমটিয়া এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বৃষ্টির আশার এক নতুন আলো।