সূত্রের খবর, কালিয়াগঞ্জের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না তৃণমূল কংগ্রেস। তাই হারানো রাজবংশী ভোট পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট জোড়া ফুল শিবির। ২০১৯ সালে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও ওই একই বছরে তারা লোকসভা ভোটের ফলের প্রেক্ষিতে পিছিয়ে ছিল কালিয়াগঞ্জ আসনে।
advertisement
ধূপগুড়ি উপনির্বাচনেও ফ্যাক্টর সেই রাজবংশী ভোট। তৃণমূল কংগ্রেসের বাজি তাই অরাজনৈতিক রাজবংশী মুখ নির্মল চন্দ্র রায়। উপনির্বাচনের প্রচারে তারা প্রচারের ইস্যু করেছে সেই রাজবংশীদের উন্নয়নকেই। বাম-কংগ্রেস জোট শিবিরও অবশ্য রাজবংশী মুখকেই ভরসা করেছে। বিজেপিও তাই। ২০১৯ সালে কালিয়াগঞ্জ উপনির্বাচন জিতলেও, ২০২১ সালে হেরে যায় তৃণমূল কংগ্রেস। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও রাজবংশী ভোটারদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়াকেই এর জন্য দায়ী করা হয়েছিল সে সময়।
বিজেপি এই আসন জিতলেও, বিধায়ক সৌমেন রায় যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে। তারপর ৪ হাজার ৩৫৫ ভোটে হেরে যাওয়া ধূপগুড়িতে তাই নয়া মুখেই জোর দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। ২০২১ সালে বিধানসভা আসন হেরে যায় তৃণমূল কংগ্রেস। দলের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট ছিল প্রাক্তন বিধায়কের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ ছিল শাসকদলের কর্মীদের। উপনির্বাচনে তাই নতুন মুখে ভরসা করেছে শাসক দল।
পঞ্চায়েত ভোটের পরে রাজবংশী ভোট তাদের সঙ্গেই আছে বলে দাবি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে স্থানীয় স্তরের ভোট আর বিধানসভা-লোকসভা ভোটের ফারাক অনেক। তাই ধূপগুড়ি উপনির্বাচন থেকে উত্তরের লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করতে চায় শাসকদল। সাম্প্রতিক সময়ে তৃণমূল-বিজেপি উভয়েই রাজবংশী সম্প্রদায় থেকে অনন্ত মহারাজ ও প্রকাশ চিক বরাইককে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে। ধূপগুড়ি উপ নির্বাচন তাই শাসকদলের কাছে রাজবংশী ভোট ফিরে পাওয়ার পরীক্ষা।
বিধানসভা ভোটের ফলের ভিত্তিতে জলপাইগুড়ি লোকসভা আসনে বিজেপি এগিয়েছিল ৬ হাজার ৯৯৫ টি ভোটে। আলিপুরদুয়ার আসনে বিজেপি এগিয়েছিল ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৯৩২ ভোটে। কোচবিহারে বিজেপি এগিয়ে ৭৬ হাজার ৮৮০ ভোটে। অন্যদিকে, রায়গঞ্জে তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়ে ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৬৪ ভোটে। বালুরঘাটে তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়ে ৮৮ হাজার ৯২০ ভোটে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, এই ৫ জেলায় বিধানসভা কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৬টি। এর মধ্যে সংরক্ষিত আসন ২০টি। এর মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে ছিল ১৬ টি আসন। বিজেপির দখলে ২০টি। রাজবংশী অধ্যুষিত বিধানসভার সংখ্যা ৩০৷ মেখলিগঞ্জ, সিতাই, জলপাইগুড়ি, রাজগঞ্জ, মাল, করণদিঘি, হেমতাবাদ, ইটাহার, কুশমুন্ডি। প্রসঙ্গত, ২০১৬ বিধানসভা ভোটে রাজবংশী অধ্যুষিত ১৯ আসন তৃণমূলের দখলে ছিল। তাই লড়াই অতটা সহজ হবে না বুঝেই কোমর বেঁধে নেমেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।