২০২০ সালের আগে উত্তর দিনাজপুর ইসলামপুরের নিষিদ্ধ পল্লী চম্পাবাগ ছিল জমজমাট। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে এই নিষিদ্ধ পল্লী হওয়ায় খদ্দেরের অভাব ছিল না। নিষিদ্ধ পল্লীতে খরিদ্দারের অভাব না থাকার কারণে তাদের খুব বেশি আর্থিক সংকট ছিল না। ২০২০ সালে সাড়া বিশ্বে করোনা সংক্রামণ ছড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি পাল্টে গেল৷ বাদ যায়নি উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর ব্লকের নিষিদ্ধপল্লী চম্পাবাগ। করোনার সংক্রামণের আশঙ্কায় এই নিষিদ্ধ পল্লীতে খুব বেশি আর খরিদ্দার মেলে না। ফলে চরম আর্থক সংকট দেখা দিয়েছে এই যৌনপল্লীতে।
advertisement
উত্তর দিনাজপুর ইসলামপুর ব্লকের বেশ কয়েকজন সমাজকর্মী শহরনামা নামে একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছেন। করোনায় আক্রান্ত এবং মৃতদের সাহায্য করাই এই সমাজ কর্মীদের কাজ। এই সমাজ কর্মীদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন বহু মানুষ। সাতদিন, দশ দিন নয় করোনা আক্রান্ত এবং মৃতদের পরিবারকে একবারে একমাসের খাদ্য সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন তাঁরা। প্রতি মঙ্গলবার শহরনামার সদস্যরা তাদের বাড়ির সামনে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী রেখে দিচ্ছেন। আক্রান্ত পরিবারের সদস্যরা সেই খাদ্য সামগ্রী বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। এই খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে থাকছে চাল, তেল বিভিন্ন ধরনের ডাল, ডিম, আলু, পেয়াজ, বিভিন্ন ধরনের মশলা, বিস্কুট এবং চা পাতা, সাবান আর বিভিন্ন ধরনের সবজি।
মঙ্গলবার চম্পাবাগের যৌন কর্মীদের কাছে একমাসের খাদ্য সামগ্রী তুলে দিলেন তাঁরা। হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের সদস্যরা ছাড়াও এলাকার বাসিন্দাদের কাছে করোনায় আক্রান্ত দুঃস্থ এবং অসহায় মানুষের খবর জানালেই শহরনামা তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে৷ হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের এডমিন সুশান্ত নন্দী জানান, করোনার প্রথম ঢেউয়ে তারা মানুষের পাশে ছিলেন। দ্বিতীয় ঢেউ আকার আরও ভয়াবহ হওয়ায় আরও বেশি সংখ্যায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। শহরনামাকে বহু মানুষ সহায়তা করছেন। এক সপ্তাহের জমা ত্রাণ সামগ্রী প্রতি মঙ্গলবার তারা দুঃস্থদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।
সুশান্তবাবু জানিয়েছেন, করোনা সংক্রামণে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বৃদ্ধ যৌন কর্মীরা। তারা শারিরিক সমস্যায় পড়লে তাদের পাশে কেউ থাকছে না। তাই তারা যৌন কর্মীদের বিষয়টি বিশেষ অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। ইসলামপুরের বাসিন্দা রাজা প্রসাদ জানান, শহরনামার এধরনের কাজে বহু দুঃস্থ অসহায় মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। তার কাছে দুঃস্থ অসহায় মানুষের খবর এলে শহরনামাকে জানিয়ে দিচ্ছেন তিনি। এবং তারা উপকৃতও হয়েছেন।