উল্লেখ্য যে গত ৪ জানুয়ারি থেকে গরুমারা (Gorumara National Park) প্রবেশদ্বারের সামনে বকেয়া বেতন প্রদান, কাজে স্থায়ীকরণ-সহ মোট ১২ দফা দাবির ভিত্তিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে সামিল হন গরুমারা নর্থ, গরুমারা সাউথ, রামসাই রেঞ্জ ও নেওরা রেঞ্জের অস্থায়ী প্রায় ৫০ জন বনকর্মী। যার ফলে এই চারটি রেঞ্জের কাজকর্ম থমকে যায়। কেননা আন্দোলনকারীরা কেউ রাইনো প্রোটেকশন ওয়ার্কার, কেউ আবার ক্যাম্প প্রোটেকশন ওয়ার্কার। এ ছাড়াও হাতির মাহুত, পাতাওয়ালা-সহ বনকে সুরক্ষা দেওয়ার নানা কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত তাঁরা।
advertisement
আরও পড়ুন : পাহাড় ছেড়ে সমতলে নেমে আসছে ভালুক! হাস মুরগি মেরে চাষের জমি তছনছ, অতিষ্ঠ গ্রামবাসী
এর পর গত ৬ জানুয়ারি ধর্মঘটে সামিল আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করেন সীমা চৌধুরী। তিনি তখনই বিষয়টি বনমন্ত্রী ও প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন বলে আশ্বাস দেন। এর পর গত ৮ জানুয়ারি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করেন বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায় ও জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মহুয়া গোপ।
সোমবার বনমন্ত্রীর বার্তা নিয়ে সেখানে পৌঁছন জলপাইগুড়ি অনারারি ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরী, সিসিএফ, ডিএফও-সহ বনাধিকারিকরা। সেখানে সীমা চৌধুরীর ফোনে আন্দোলনকারীরা কথা বলেন বনমন্ত্রীর সঙ্গে। এরপর বনমন্ত্রীর আশ্বাসে ধর্মঘট তুলে নেন আন্দোলনকারীরা।
আরও পড়ুন : টিকা নিতে নারাজ স্কুল শিক্ষক, বাড়ির দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিলেন গ্রামের মহিলারা
জলপাইগুড়ি অনারারি ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন তথা বানারহাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সীমা চৌধুরী বলেন, "অস্থায়ী বনকর্মীরা গরুমারা গেটের সামনে তাঁদের বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন । ঠান্ডা এবং করোনার মধ্যে এভাবে আন্দোলন করছিলেন তাঁরা। বিষয়টি আধিকারিকদের মাধ্যমে মন্ত্রীর কাছে পৌঁছয়। বনমন্ত্রীর নির্দেশে আমি এসেছিলাম এবং বনকর্মীদের সঙ্গে কথা বলি। আন্দোলনরত কর্মীদের সাথে বনমন্ত্রীকে ফোনে কথা বলিয়ে দিই, বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তাঁদের আশ্বাস দেন, তাঁদের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার। তাঁদের কাছে আবেদন জানান যাতে তাঁরা এই আন্দোলন থেকে সরে আসেন । বনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তাঁরা আশ্বস্ত হয়েছেন এবং তাঁরা আন্দোলন তুলে নিলেন। আমরা ধন্যবাদ জানাই বনকর্মীদের। বনমন্ত্রী বলেছেন তাঁদের দাবি-দাওয়া আমার মারফত বনমন্ত্রীর কাছে পৌঁছনোর জন্য। আমি বনমন্ত্রীর কাছে তাঁদের দাবি সনদ পাঠিয়ে দেব এবং তার পর বিষয়টি নিয়ে তিনি আধিকারিকদের সাথে কথা বলবেন।"
আন্দোলনরত কর্মী আকাশ মঙ্গর বলেন, ‘‘আমরা ১২ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলাম৷ আজ অনারারি ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরী আমাদের সঙ্গে কথা বলেন৷ আধিকারিকরা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন এর আগে৷ আজ সীমা চৌধুরী বনমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের ফোনে কথা বলিয়ে দেন। বনমন্ত্রীর কাছে আমরা আমাদের দাবির কথা তুলে ধরি। তিনি সমস্ত বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন এবং আন্দোলন তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন, তাই আমরা আমাদের আন্দোলন তুলে নিচ্ছি৷ ২ মাসের মধ্যে দ্রুত আমাদের সমস্যার সমাধান যদি না হয়, তাহলে আমরা ফের আন্দোলনে যাব।
( প্রতিবেদন- রকি চৌধুরী)