তৃণমূলে যোগ দিয়েই প্রধান 'শত্রু' হিসেবে বিজেপি-কেই নিশানা করেছিলেন বিনয় তামাং। তিনি বলেছিলেন, ''আমি পাহাড়ে উন্নয়ন করতে চাই। সবাইকে বাঁচাতেই আমি এগিয়ে এসেছি৷ গোর্খাল্যান্ড ললিপপ দেখিয়ে বিজেপি পাহাড়ের ভোটে ফায়দা তোলে। কিন্তু আমাদের কাজ উন্নয়ন ঘটানো। পাহাড়ে আমাদের মূল বিরোধী বিজেপি৷ আর বিজেপি-র সহযোগীরা আমাদের প্রধান বিরোধী।'' কিন্তু বিনয়ের সঙ্গে বিমল গুরুঙ্গের সম্পর্ক পাহাড়ে সর্বজনবিদীত। এদিন অবশ্য সেই 'আশঙ্কা' দূর করে দিয়েছেন বিনয়।
advertisement
রবিবার তিনি বলেন, ''বিমল গুরুঙ্গও তৃণমূলেরই জোটসঙ্গী। তাই আগামীদিনে পাহাড়ের সার্বিক উন্নয়ন, বিকাশের জন্যে ঐক্যবদ্ধভাবেই লড়ব আমরা। বিজেপিমুক্ত পাহাড় করব।'' তৃণমূলে যোগ দিয়ে আজই কলকাতা থেকে ফিরেছেন বিনয়। তাঁর দাবি, এবার পাহাড়, তরাই এবং সমতলে তৃণমূল আরও শক্তিশালী হবে এবং সংগঠনকে মজবুত করাই লক্ষ্য। পৃথক রাজ্য বা পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের ইস্যুতে বিজেপিকে একহাত নিয়ে তিনি বলেন, ''পদ্ম শিবির বরাবরই পাহাড়বাসীকে বোকা বানিয়ে এসেছে। নির্বাচনের আগে গোর্খাল্যাণ্ডের জিগির তুলে ভোট বৈতরণী পার করে। এবার আর পাহাড় বিজেপিকে সমর্থন করবে না।'' এদিন এনজেপি স্টেশনে বিনয় তামাং, রোহিত শর্মাদের স্বাগত জানায় দলীয় কর্মী থেকে বিনয় অনুগামীরা।
আরও পড়ুন: 'ভুল চিন্তাভাবনা এসেছিল', সুকান্ত মজুমদারের কাছে 'ভুল' স্বীকার বিধায়কের! কিন্তু কেন?
কিন্তু তৃণমূলে কেন যোগ দিলেন? আগেই বিনয় বলেছিলেন, ''এতদিন আঞ্চলিক দল করতাম। এখন থেকে জাতীয় দল করব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন ভারতবর্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য মুখ। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই নিজের নেতৃত্বগুণ প্রমাণ করছেন। তাই পাহাড়ে এবার থেকে তৃণমূলকে ছড়িয়ে দিতে কাজ করব।'' কিন্তু চিন্তা ছিল বিনয়-বিমল যুগলবন্দি নিয়ে।
আরও পড়ুন: বড়দিনের সকালে সেন্ট পলস ক্যাথিড্রালে মারাত্মক ঘটনা, দাউদাউ আগুন তরুণীর চুলে!
বস্তুত বিমল গুরুঙ্গয়ের সঙ্গে তৃণমূলের সুসম্পর্ক হওয়ার পর থেকেই কিছুটা বেকায়দায় পড়েছিলেন বিনয় তামাং। দুজনকে এক ছাতার তলায় আনতে তৃণমূলের শীর্ষস্তর থেকে চাপও দেওয়া হচ্ছিল। বিধানসভায় যে ভাবে ভোট ভাগাভাগিতে দার্জিলিং এবং কার্শিয়াং আসন খুইয়েছে মোর্চা, তা পছন্দ হয়নি শাসক দলের। ফলে ভোটের আগে যা শুধু ‘পরামর্শ’ ছিল, পরে সেটাই চাপ হিসেবে দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে বিনয় তামাংয়ের কাছে তৃণমূলে যোগদান এবং বিমল গুরুঙ্গয়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলার দাবি তৃণমূলের কাছে যতটা স্বস্তির, বিজেপি-র কাছে ততটাই দুশ্চিন্তার।