শনিবার প্রকাশ্য সভা থেকে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বকেয়া টাকা আটকে রাখা থেকে সিবিআই-ইডি-র ব্যবহার নিয়ে প্রকাশ্যে সরব হলেন অভিষেক। জানালেন, তাঁদের ভদ্রতাকে দুর্বলতা ভাবছে কেন্দ্র। অভিষেক বলেন, 'বিজেপিকে আপনারা জিতিয়েছেন। এরা হল কালসাপ। দুধ খেয়ে, আপনাকেই ছোবল মারছে।'
advertisement
তাঁর কথায়, 'বাংলার বিরোধী দলনেতা কেন্দ্রকে চিঠি লিখে বলছে বাংলার টাকা বন্ধ করে দাও। মানুষকে দুর্বল ভাবলে অধিকারের টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাই আপনাদের যারা ভাতা মারছে তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করুন। এই জেলা থেকে চার লক্ষ মানুষের সই চাই। আমাকে আপনারা সই দিন, আমি একশো দিনের টাকা ছিনিয়ে আনব। বিজেপির উদ্দেশ্য তাঁর হুঁশিয়ারি, দিল্লিতে বৃহত্তর আন্দোলন হবে৷ তোমরা যে ভাষায় বোঝো, আমি সেই ভাষাতেই উত্তর দিতে জানি৷ দিল্লি স্তব্ধ করে ছাড়ব। মন্ত্রক চলতে দেব না তোমাদের। কোনও সিবিআই, ইডির ক্ষমতা নেই। যত আমাদের পিছনে এদের লাগাবে, রাস্তায় নেমে আমাদের আন্দোলন তত বাড়বে।'
'গত সাত মাসে আমি ৪ বার এসেছি জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে। আমরা হয়ত ২০২১ সালে এখানে ভাল করতে পারিনি। কিন্তু আপনারা বলতে পারবেন না আমরা এখানে কাজ করিনি৷ আমরা আলিপুরদুয়ারের সব অঞ্চলেই কাজ করছি। এটাই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য। আগে সভা করতে আসলে বলা হত, উত্তরবঙ্গে অভিষেক। এখন বলা হয় আলিপুরদুয়ারে অভিষেক। এই দৃষ্টিভঙ্গির বদল এসেছে। আগামী ১৬ তারিখ থেকে বুথে বুথে আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি৷'
এই জেলার বেশিরভাগ অংশের ভোটই চা-বলয়ের ভোট। যদিও তৃণমূলের সেই ভোটব্যাঙ্কে ধস নামে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে। যার ফলে বিজেপি প্রার্থী জন বারলা প্রায় ৫৫.২ শতাংশ ভোট পান ৷ আর তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দশরথ তিরকে ভোট পান মাত্র ৩৭.৩ শতাংশ ভোট। ২০২১-এ এই জেলায় বিধানসভা ভিত্তিক ফলের বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে এই জেলার ৫ বিধানসভা আসনের প্রাপ্ত ভোট অনুযায়ী বিজেপি পেয়েছে প্রায় ৫০.৪ শতাংশ আর তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ৪০.৪ শতাংশ ভোট। ফলে জেলার ৫ বিধানসভা আসনই হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের।ফালাকাটা বিধানসভা আসনে বিজেপি প্রার্থী দীপক বর্মণ পেয়েছিলেন ৪৬.১৭ শতাংশ ভোট। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুভাষ চন্দ্র রায় পান মাত্র ৪৪.৯ শতাংশ ভোট। কুমারগ্রাম বিধানসভা যেখানে বিজেপি প্রার্থী মনোজ ওঁরাও পেয়েছিলেন ৪৮.১৭ শতাংশ ভোট। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী লুইস কুজুর পান ৪৩.৪৪ শতাংশ ভোট। মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রাজেশ লাকড়া পেয়েছিলেন ৩৬.৫৭ শতাংশ ভোট৷ সেখানে মনোজ টিগগা পান ৫৪.৩৫ শতাংশ ভোট। কালচিনি বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থী বিশাল লামা পেয়েছিলেন ৫২.৬৬ শতাংশ ভোট। পাশাং লামা তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছিলেন ৩৮.০৭ শতাংশ ভোট। আলিপুরদুয়ার বিধানসভা আসনে বিজেপি প্রার্থী সুমন কাঞ্জিলাল পান ৪৮.১৯ শতাংশ ভোট, তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সৌরভ চক্রবর্তী পান ৪১.০১ শতাংশ ভোট।
আবীর ঘোষাল