উত্তর ২৪ পরগনা: করোনা ভয় কিছুটা সরতেই ২০২২ এ ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে মতুয়া মহামেলায় ফিরল পুরোনো স্মৃতি। পুন্যস্নানে নামল মতুয়া ভক্তদের ঢল। ঠাকুরবাড়িতে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে দলবদ্ধ হয়ে মতুয়ারা ডঙ্কা, কাশি, নিশান নিয়ে প্রদক্ষিন করে ডুব দিলেন কামনা সাগরের জলে। মাহেন্দ্রক্ষন ধরে পুন্য তিথিতে দুর দুরান্ত থেকে আসা গোসাই, পাগল, দলপতি সহ মতুয়াভক্তরা সকলেই মনস্কামনা পুরন করতে ডুব দিলেন কামনা সাগরে। ভিড় ঠেলে একবার কামনা সাগরে স্নান করতে পারলেই মনে তৃপ্তি আসে বলে জানিয়েছেন মতুয়াভক্তরা। তাদের বিশ্বাস হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের (Thakurnagar) পদধুলি রয়েছে এই ঠাকুরবাড়িত। আর ঠাকুরবাড়ির এই কামনা সাগরের জলে রয়েছে অনেক মাহাত্ম্য। তাই কামনা সাগরে স্নান বড় পুণ্যের। তাই তো প্রতিবছর দল বেঁধে দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন মতুয়া (Matua) ভক্তরা। ঠাকুরবাড়ি সূত্রে জানা যায়, এ বছর মেলায় ভিড় হয়েছে কয়েক লক্ষ মানুষের। এখন চলছে মেলা। এবছর মতুয়া মহামেলায় দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে আসা এক মতুয়া ভক্ত কমল বিশ্বাস জানালেন, কামনা সাগরের জলে স্নান করলে বা পান করলে সবব্যাধি দুর হয়। তাদের বিশ্বাস, কামনা সাগরে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতে স্নান করলে মনোবাসনা পূরন হয়। ঠাকুরনগরের মেলায় লক্ষ লক্ষ ভক্ত সমাগমে স্নানকালে কামনাসাগরের জল হয়ে যায় কালো। তবুও সেই জলেই ভক্তি ভরে সকলেই স্নান সারেন মনোবাঞ্ছা পূরনে। জলের গুনগত মান যাচাই নয়, বরং একবার সেই জলে ডুব দিয়ে পূন্য অর্জনের আশায় সকলেই নামেন কামনা সাগরে। কামনা সাগরের জলের মাহাত্ম্য নিয়ে আরেক মতুয়া ভক্ত আরতী মজুমদার জানালেন, শুধু স্নান নয়। তারা এই জল বাড়ি নিয়ে যান। সারাবছর সংরক্ষন করে রাখেন। যেকোন শুভ অনুষ্ঠানে তারা এই কামনা সাগরের জল ব্যবহার করে থাকেন। এমনকী শরীরে কোন রোগ-ব্যধির প্রকোপ দেখা দিলে এই জল বিশ্বাস নিয়ে পান করলে সেরে যায় তাদের ব্যাধি। মতুয়াদের বিশ্বাস কামনা সাগরের জলই তাদের কাছে ঈশ্বরের চরণামৃত। কামনা সাগরের এই নোংরা কালো জল গায়ে দিলে কিংবা চরণামৃত হিসেবে পান করলেও কোন রোগ-ব্যাধি হয় না বলেই জানান মতুয়া ভক্তরা। আর তাই হয়তো বলা যায়, 'বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর।' (প্রতিবেদক - রুদ্র নারায়ন রায়)