একেবারেই সামনে চলে এসেছে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন ২০২৩। আর আসন্ন নির্বাচনকে পাখির চোখ করে প্রচারে ঝড় বইছে গোটা রাজ্যেই। সবকটি রাজনৈতিক দলই শেষমুহূর্তে যার যার দলের তারকা প্রচারকদের এনে ভোটের বাজার ধরতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। যদিও বিরোধী শিবিরকে অনেক পেছনে ফেলে প্রচারের ময়দান দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শাসক ভারতীয় জনতা পার্টি। এই কয়েকদিনের মধ্যে রাজ্যে এসে ঝোড়ো প্রচার সেরে নিয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় গৃহ মন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, বলিউড তারকা মিঠুন চক্রবর্তী, বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ অন্যান্য তাবড় তাবড় নেতৃত্ব। এর মধ্যে মঙ্গলবার দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে অংশ নিতে রাজ্যে আসেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা-সহ আরও কিছু শীর্ষ নেতৃত্ব। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরার উত্তর জেলার বাগবাসায় দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে আয়োজিত বিজয় সংকল্প জন সমাবেশে যোগদান করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডঃ মানিক সাহা।
advertisement
সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রশংসা করে ত্রিপুরার সিপিআইএম ও কংগ্রেস জোটের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় জনতা পার্টির ডাবল ইঞ্জিন সরকার সারা দেশে ত্রিপুরাকে আলাদা পরিচিতি দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মূল মন্ত্র সবকা সাথ, সবকা বিকাশ প্রকৃত অর্থে প্রতিফলিত হয়েছে ত্রিপুরায়। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ নিধি প্রকল্প-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে উপকৃত হয়েছেন এই রাজ্যের জনগণ। একটা সময় ত্রিপুরার মানুষ কমিউনিস্ট পার্টির অপশাসন দেখেছে। কংগ্রেসের শাসনও দেখেছে ত্রিপুরার মানুষ। তারা শুধু দুর্নীতি, অপশাসন, গুন্ডাগিরি নিয়ে রাজ্য শাসন করেছিল। ত্রিপুরায় ভারতীয় জনতা পার্টির শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরই ডাবল ইঞ্জিনের সুফল পেয়েছেন এখানকার মানুষ। তাই সিপিআইএম কংগ্রেসের অশুভ জোট নিয়ে সকলকে আরও সতর্ক হতে হবে।’’
আরও পড়ুন- রেল যাত্রীদের জন্য ‘সুখবর’, রাজ্যে আরও বেশি গতিতে ছুটবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস
যোগী আদিত্যনাথ আরও বলেন, ‘‘সব কিছুর একমাত্র বিকল্প হতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি। কারণ এই পার্টির অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে জনগনের প্রকৃত বিকাশ। কংগ্রেস আপনাদের বিশ্বাসের সঙ্গে খেলা করছে। ভুলে যাবেন না, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের সময়ে শুধু ঘোটালা আর ঘোটালা হয়েছে। কয়লা কেলেঙ্কারি থেকে টু জি স্পেকট্রাম ঘোটালা ভুলে যায়নি দেশের মানুষ। আর ত্রিপুরাতে এখন প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে ত্রিপুরা রাজ্যে জনমুখী প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন জনসাধারণ।’’ তাই আসন্ন নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীদের জয়ী করার আহ্বান জানান উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।
জন সমাবেশে অন্যতম বক্তা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য নাথের কাজকর্মের ভুয়সী প্রশংসা করেন। ত্রিপুরা রাজ্যেও উন্নয়নের কাজ অব্যাহত রাখা হবে। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রে গৃহ মন্ত্রী অমিত শাহ, সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার নির্দেশিত পথে এগিয়ে যাবে রাজ্য। ফের একবার সিপিআইএম কংগ্রেসের অশুভ জোট নিয়ে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে মথার নীতি আদর্শ নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘তিপ্রামথার দাবি অনুযায়ী গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড কখনও হতে দেওয়া হবে না। ত্রিপুরা ত্রিপুরাতেই থাকবে। এক্ষেত্রে মথার নেতৃত্ব রাজ্যের জনজাতিদের বিভ্রান্ত করে ভুল দিশায় পরিচালিত করছে। জাতি জনজাতির মধ্যে ঐক্যের বন্ধন মজবুত করাই ভারতীয় জনতা পার্টির অন্যতম লক্ষ্য। কাজেই আসন্ন নির্বাচনে মানুষই অশুভ জোটের বিরুদ্ধে তাদের মত প্রতিফলিত করবে।’’ ভারতীয় জনতা পার্টির মনোনীত প্রার্থীরাই বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হবেন বলে তিনি আশাবাদী বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।