৫ জানুয়ারি জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে তাণ্ডব। অভিযুক্ত ন’জনকে চিহ্নিত করেছে দিল্লি পুলিশ। তাঁর মধ্যে রয়েছেন ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষ। শনিবার একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের ৩৭ জনকে চিহ্নিত করে পুলিশ। তাঁদের দাবি, ইউনিটি এগেনস্ট লেফট নামে ষাট জনের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ সামনে এসেছে। তাঁরাই গত রবিবারের হামলার সঙ্গে যুক্ত।
ঐশীর দাবি, ‘‘ABVP-কে আড়াল করার চেষ্টা করছে দিল্লি পুলিশ। ভুয়ো ভিডিও ছবি দেখিয়ে তদন্তে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা হচ্ছে। দিল্লি পুলিশের তদন্ত প্রভাবিত। হামলার একাধিক ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু, সেগুলিকে আড়াল করে তদন্ত সাজাচ্ছে অমিত শাহের পুলিশ। আমার ছবি দেখে কী করে বুঝে গেল আমি হামলা চালিয়েছি। আমি কোথাও মুখোশ পড়িনি। আমার ছবি প্রকাশ করে জীবনহানির আশঙ্কা করছি। আমাকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ। তাতে কোনও তদন্ত হয়নি। কুড়ি জন ঘিরে ছিল। তারা কারা?’’
advertisement
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনি।
পুলিশ সাড়ে পাঁচটা থেকে ক্যাম্পাসে ছিল। কেন পদক্ষেপ করেনি।
ভিসিকে সরাতে হবে। তদন্ত করতে হবে। উপাচার্যের নেতৃত্বে কমিটি গঠন। এই কমিটি প্রভাবমুক্ত নয়। স্বাধীন কমিটি তদন্ত করুক।
৩ তারিখ সার্ফার ভাঙচুরের অভিযোগ, গল্প কিছুই করেনি।
জেএনইউ হামলার সঙ্গে যুক্ত ৩৭ জনকে চিহ্নিত করল দিল্লি পুলিশ। তাদের দাবি, ‘ইউনিটি এগেনস্ট লেফট’ নামক ৬০ জনের একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের বহু সদস্য রবিবারের হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত ছিলেন। পুলিশের একটি সূত্র আরও জানাচ্ছে, সেদিনের হামলায় জড়িত ১০জন বহিরাগত এই গ্রুপেরই সদস্য।
পুলিশের তালিকায় থাকা অভিযুক্ত ৩৭ জনের একজন মনীশ জঙিদ। জেএনইউ-এর অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সম্পাদক। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিচ্ছেন মনীশ। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, ‘‘আমার ফোন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তাই সারাতে দিয়েছিলাম। ফোন হাতে পেয়ে দেখি কেউ আমাকে ওই গ্রুপে যুক্ত করেছে।’’
এ দিন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জগদীশ কুমার বৈঠক করেন ছাত্রদের সঙ্গে। পরে সংবাদমাধ্যেমের কাছে বহিরাগত তত্ত্ব খাড়া করেন তিনি। তার কথায়, বহু বাইরের ছেলেমেয়ে বেআইনি ভাবে হোস্টেলে থাকছে। যে কোনও নৈরাজ্যে তারা অংশগ্রহণ করতে পারে কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্রিয়ার সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদ অবশ্য বলছে কোনও আহত ছাত্রের সঙ্গে দেখা করেননি উপাচার্য। উপাচার্যের ইস্তফার দাবিতে তাঁরা এখনও অনড়।
জেএনইউয়ে হামলার পরেই অভিযোগের আঙুল উঠেছিল আরএসএসের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র দিকে। ওই হামলার একাধিক ছবি এবং এই সংক্রান্ত ‘পরিকল্পনার’ হোয়্যাটসঅ্যাপ কথোপথন ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পাশাপাশি দিল্লি পুলিশ এবং জেএনইউয়ের সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত উপাচার্যের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব নিশানা করেন বাম ছাত্র সংগঠনগুলিকেই। তবে দিল্লি পুলিশের গত বৃহস্পতিবার হিংসার ঘটনায় জড়িতদের যে ছবি পেশ করেন, তাতে যোগেন্দ্র ভরদ্বাজ, বিকাশ পাটিল নামক দুই এবিভিপি সমর্থকেরও ছবি ছিল।
অন্য দিকে, উপাচার্য এম জগদেশ কুমারও প্রথম থেকেই হিংসার দায় বামপন্থী ছাত্র সংসদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন। সেই সঙ্গেই দাবি করেন, রবিবার সন্ধ্যার তাণ্ডবের শিকড় আসলে সিমেস্টার পরীক্ষার জন্য অনলাইন নথিভুক্তি রুখতে ১ ও ৪ জানুয়ারি আন্দোলনকারীদের সার্ভার রুম তছনছ করা থেকে। ওই ঘটনায় ঐশী-সহ ২০ জনের নামে এফআইআর করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।