ওই শিক্ষকের বিদায় অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হৃদয় ভেঙে পড়া মুহূর্তের ওই ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে বিদায়ের প্রাক্কালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষককে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। শিক্ষক শিবেন্দ্র সিংকে (Shivendra Singh) পাহাড়ি অঞ্চলের চান্দৌলির রায়গড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চার বছর শিক্ষকতা করার পর সম্প্রতি বদলি করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার তার বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বাঁধভাঙা কান্নার সামনে অসহায় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ওই শিক্ষককে। বিদ্যালয়ের অসংখ্য ছাত্র ছাত্রী তাঁকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করে। কিছু ছাত্র যেন তাঁকে শক্ত করে বেঁধে রাখতে চায়। শিক্ষক শিবেন্দ্র কখনও হাসছেন, আবার কখনও তার শিক্ষার্থীদের সান্ত্বনা দেওয়া চেষ্টা করছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
advertisement
আরও পড়ুন: শিশুরা যদি সাতটায় স্কুলে যেতে পারে, বিচারপতিরা কেন ন’টায় আদালতে আসবেন না, প্রশ্ন আদালতের
এর আগে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চলাকালীন তার সহকর্মী ও সহমর্মীরা তাকে নানান উপহার ও প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। বিদায়কালে তিনি কয়েকজন ছাত্রকে আশ্বস্ত করে জানান, ‘আমি শীঘ্রই তোমাদের সঙ্গে আবার দেখা করতে আসব।’ অন্যদের উদ্দেশে তিনি জানান, ‘কঠোর পরিশ্রম করে পড়াশোনা চালিয়ে যাও। তোমাদের ঘুরে দাঁড়াতেই হবে।’
বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও শিক্ষার্থীদের মতে, ‘শিবেন্দ্র স্যারের মতো মানুষ হন না। তিনি এমন অপ্রচলিত ভঙ্গিতে পড়াতেন যা এর আগে কেউ শেখায়নি।’ অন্যান্য শিক্ষক জানিয়েছেন, সেই কারণেই শিবেন্দ্রবাবু শিক্ষার্থীদের কাছে এত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
আরও পড়ুন: দূতাবাসের ছুটি নেই, তাও ভিসা বিলম্বে নাজেহাল ভারতীয় যাত্রীরা! করণীয় কী?
তাঁকে ২০১৮ সালে স্কুলে একজন সহকারী শিক্ষক হিসাবে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। তিনি শিশুদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে নানা মজার মজার খেলাধুলো এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতেন। এতে তিনি আরও বেশি সংখ্যক ছাত্রকে স্কুলের প্রতি আকৃষ্ট করেছিলেন। যদিও এর আগে ওই অঞ্চলের নানান প্রতিবন্ধকতার কারণে বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার খুবই কম ছিল।
শিক্ষার্থীদের পড়ানোর সময় অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যেত তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মাটিতে বসে রয়েছেন। শিবেন্দ্র সিং জানান, ‘আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাহাড়ে ক্রিকেট খেলতাম, তাদের বিশ্ব সম্পর্কে সচেতন করার জন্য সমস্ত রকম পদ্ধতি ব্যবহার করতাম। ওদের ছেড়ে যাওয়া আমার কাছেও অত্যন্ত বিষাদের বিষয়। কিন্তু নির্দেশ যখন এসেছে আমাকে যেতেই হবে।’