রাষ্ট্রসংঘ নিয়োজিত ‘ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (আইপিসিসি)-এর বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন ছিল শুধুই বিপদের আগাম পূর্বাভাস। এবার সরাসরি তার ফল ভুগতে শুরু করেছে মানবগ্রহ। ভারতের গড় তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে তিন থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস। গ্রীষ্মকালের স্থায়ীত্ব বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল। মেট্রো শহরগুলি হয়ে উঠতে পারে ‘তপ্ত দ্বীপ’।
সোমবারই দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিওলে আইপিসিসি-র বিশেষ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্ট বলা হয়েছে, প্রথমবারের জন্য পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পৌঁছে গিয়েছে ১ ডিগ্রিতে। কমার পরিবর্তে বেড়েই চলেছে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমণ। তার জেরে অ্যান্টার্টিকা আর গ্রিনল্যান্ডে বরফ গলার হার আরও বাড়ছে। অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে ২০৩০-এর মধ্যে এই মাত্রা পৌঁছে যাবে দেড় ডিগ্রিতে।
advertisement
পৃথিবীর তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি বেড়ে গেলে কী কী হতে পারে, তার ইঙ্গিত দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। অ্যান্টার্কটিন্টা ও গ্রিনল্যান্ডে আরও দ্রুত গলবে বরফ। দক্ষিণ গোলার্ধে উষ্ণতা বাড়লে তার প্রভাব পড়বে গোটা বিশ্বেই। বরফের চাঁই গলে সমুদ্রের জলে মিশবে। আয়তন বাড়বে জলভাগের। জলস্তরের উচ্চতা তখন আর ইঞ্চিতে নয়, প্রতি বছর ফুটের হিসাবে বাড়বে। ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাবে বাস্তুতন্ত্র। আর তারপর? মহাপ্রলয়!
পৃথিবীর তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি বেড়ে গেলে তার ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়বে ভারতেও। মানুষের সহ্যশক্তি বেশি হলেও অনেক প্রাণী, উদ্ভিদ এই উষ্ণতার সঙ্গে যুঝতে পারবে না। দিল্লি, বেঙ্গালুরু, চেন্নাইয়ের মতো মেট্রো শহরগুলিতে গরম আরও বাড়বে। সমুদ্রের জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় সমুদ্র উপকূল এবং দ্বীপগুলি ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সমুদ্রের তলদেশে প্রায় কোনও উদ্ভিদই বাঁচতে পারবে না।
তা হলে উপায়? বিজ্ঞানীদের দাবি, এখনও পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়নি। সমাধানের রাস্তা মাত্র দুটি-- হয় কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নির্গমন কমাতে হবে, নয়তো এমন কিছু করতে হবে, যাতে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়া কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস শুষে নেওয়া যায়। এবং এই শুষে নেওয়া বা পরিশুদ্ধ করার পরিমাণ হতে হবে নির্গমণের থেকে বেশি।
আরও পড়ুন-ব্রাহ্মসের গোপন খবর পাচার পাকিস্তানে? নাগপুরে জালে ISI এজেন্ট