রক্তে তাঁর রাজনীতি! প্রদ্যোতের বাবা মহারাজ কিরীট বিক্রম এবং মা বিভু কুমারী দেবী দু'জনেই কংগ্রেস রাজনীতি করেছেন। ১৯৬৭ সালে মহারাজা কিরীট বিক্রম লোকসভা নির্বাচনে হারিয়েছিলেন বামপন্থী নেতা দশরথ দেবকে। এর পর '৭৭ ও '৮৯ সালেও কিরীট বিক্রম লোকসভা ভোটে জয়ী হন। প্রদ্যোতের মা মহারানি বিভু কুমারী দেবী ১৯৮৩ এবং '৮৮-র বিধানসভা নির্বাচনে যথাক্রমে মাতাবাড়ি ও আগরতলা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন। আগরতলায় তিনি সিপিআইএম-এর মানিক সরকারের বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছিলেন মাত্র ৮১ ভোটের ব্যবধানে। যদিও প্রদ্যোত নিজেকে রাজনীতিক বলতে রাজি নন, তাঁর কথায়, '' আমি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নই। ত্রিপুরাবাসীদের জীবন উন্নত করাই আমার লক্ষ্য। নিজের কোনও স্বার্থ চরিতার্থ করতে ভোটযুদ্ধে নামিনি। আমি পলিটিশিয়ান নই বলেই এত মানুষের সমর্থন পেয়েছি। আজকাল রাজনীতিকদের আর কেউ বিশ্বাস করে না!''
advertisement
এবারের ভোটের মন্ত্র তো 'থানসা', একতা
ত্রিপুরায় নানা সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন... বাঙালি, মুসলিম, মণিপুরি, চা-বাগানের শ্রমিক! আমাদের কারও প্রতি কোনও আক্রোশ নেই। আমি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমি চাই স্বায়ত্তশাসিত এলাকায় যে মানুষেরা আছেন, তাঁরা সাংবিধানিক সমাধান পাক।
কংগ্রেস, সিপিআইএম না বিজেপি? প্রধান প্রতিদ্বন্দী কে?
কংগ্রেস আর সিপিআইএম তো ময়দানে নেই-ই বললেই চলে! প্রধান লড়াই বিজেপি-র সঙ্গে!
নির্বাচনের আগে বাঙালিদের জন্য কী বার্তা দেবেন ?
ছোটবেলায় আমার পড়াশোনা কলকাতায়। আমি বাঙালিদের খুব ভালবাসি। আমি এইটুকু আশ্বাস দিতে চাই, কোনও বাঙালিকে আর কখনও তাঁদের জমি, বাড়ি ছাড়ার কথা বলা হবে না।
একটি এক টাকার নোট এবং একটি ভোট... ২০০৪ সালে অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে এই স্লোগান তুলে প্রচারে নেমেছিলেন প্রয়াত কংগ্রেস নেতা ওয়াইএস রাজশেখর রেড্ডি। এবার ত্রিপুরার ভোটে সেই 'ক্রাউড ফান্ডিং’'কেই আপনি হাতিয়ার করলেন...
ওয়াইএস রাজশেখর রেড্ডি-র কাছে টাকার কোনও অভাব ছিল না। বাবা মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। আমার বাবা নেই ১৫-১৬ বছর। আমরা কোনও ন্যাশনাল পার্টির সঙ্গে জোট বাঁধিনি। তাই ফান্ডের সমস্যা ছিল। আমরা যা সমর্থন পেয়েছি, এককথায় অনবদ্য! কেউ ১০ টাকা দিয়েছেন, কেউ বা ২০, কেউ ৫০০, কেউ ১০০০! আমি একটা জিনিস বুঝতে পেরেছি, এমন বহু মানুষ আছেন, যাঁরা এই দলের পাশে আছেন, দলের-ই অবিচ্ছেদ্য অংশ।
'কিং' কি তবে এবার 'কিং মেকার'?
না না! 'কিং' ঈশ্বর তৈরি করেন। আমরা সাধারণ মানুষ। আমি লড়ছি সাধারণ মানুষের অধিকারের জন্য।
সিপিআইএম, বিজেপি, কংগ্রেস... সবাই আপনার সঙ্গে জোট করতে চেয়েছিল...
জোট হবে না, যতক্ষণ না পর্যন্ত লিখিত আশ্বাস পাচ্ছি
কী আশ্বাস?
বৃহত্তর ত্রিপুরার দাবি... এর সাংবিধানিক সমাধান হবে। মুখের কথায় হবে না, লিখিত চাই। স্বচ্ছ হতে হবে, যাতে আমরা জনতাকে দেখাতে পারি। যদি জনতা মেনে নেয়, তাহলে ভাল! যদি না মানে, তাহলে আমরা তাদের সঙ্গে কোনও 'জুমলা' করব না! ওরা খুব সরল মানুষ।
সাক্ষাৎকার: বিশ্ব মজুমদার, এডিটর ইস্ট, নেটওয়ার্ক ১৮