সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। কংগ্রেস ও সিপিএমের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হন। বিশেষ করে রাজ্য রাজনীতির কিছু নেতার দলবদল ইস্যুতে তিনি বলেন, ‘‘এদের বৈশিষ্ট্য অনেকটাই আরশোলার জীবনচক্রের মতো। আজ কংগ্রেস, কাল বিজেপি, পরের দিন তৃণমূল, এরপর আবার কংগ্রেস। এদের জীবনচক্র এভাবেই চলবে। আগামী দিনে কী হবে, কেউ জানে না। এধরনের লোককে মানুষ বিশ্বাস করেছিল। তাঁদের কাছে টিকিট পাওয়াটাই আসল। টিকিট পেয়ে গেলে মানুষ এমনিতেই আসবে। এটাই তাঁদের ধারণা।’’
advertisement
আরও পড়ুন: ফের বন্দে ভারতে এক্সপ্রেসে আতঙ্ক! সোমবার সকালে হঠাৎ ট্রেনের কোচে দাউদাউ আগুন
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের আসল শত্রু মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি। সন্ত্রাস, খুন, ধর্ষণ, টুটি টিপে ধরা, বদলি করা, এটাই ছিল তাদের ৩৫ বছরের শাসন কালে রুটিন। আন্দোলনের নামে গণতন্ত্রকে ব্যবহার করে উশৃঙ্খলতা কিছুতেই বরদাস্ত করা হবে না। সতর্ক থাকতে হবে ৩৫ বছরের সিপিএম-এর সংস্কৃতি যাতে ভারতীয় জনতা পার্টিতে প্রবেশ না করে। পূর্বতন সরকার ১৩ হাজার কোটি টাকার ঋণের বোঝা বর্তমান সরকারের মাথার উপর রেখে গিয়েছে। তারা আবার দাবি করে এক বছরের মধ্যে সমস্ত কিছু করে নেওয়ার। যেটা কোনওভাবে সম্ভব নয়। রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত, এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা এবং এক মণ্ডল শ্রেষ্ঠ মণ্ডল গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।’’ সম্পর্কের সঙ্গে সমর্থন এই নীতিতে কাজ করতে দলীয় কার্যকর্তাদের আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ব্যারাকপুর স্টেশনে অবরোধ! সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেই চরম দুর্ভোগ যাত্রীদের
যোগদান সভায় মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে মণ্ডল নেতৃত্ব ও কার্যকর্তাদের বিশেষ ভূমিকা নিতে হবে। শুধু গ্রামীণ এলাকা নয়, এবার শহরের বুকেও বড় ধরনের ভাঙন ধরাল ভারতীয় জনতা পার্টি। এই সভায় ১৩০৯ জন ভোটারের যোগদান তারই প্রমাণ তুলে ধরে। আগামী দিনে এই ঢেউ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সুনামির মতো আছড়ে পড়বে। এতে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে বিরোধী দলগুলি। ফলের আশা না করে কাজ করতে বিশ্বাসী বিজেপি দল।
তিনি বলেন, কেন্দ্রে বিজেপি সরকার, রাজ্যেও বিজেপি সরকার শাসন করছে। এতে সবদিক দিয়ে লাভবান হচ্ছেন রাজ্যের আমজনতা। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক সহিংস ঘটনা পরিলক্ষিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল নেতারা ত্রিপুরায় এসে গণতন্ত্র কাকে বলে দেখে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের পতাকা ছাড়া আর অন্য কোনও দলের পতাকা তুলেতে দেওয়া হয় না। এই রাজ্যে সেটা হয় না। গত বিধানসভা নির্বাচন তারই প্রমাণ। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টি ক্ষমতাসীন হয়েছে। বিধানসভায় না পেরে কুচক্রীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য সফল হতে দেয়নি সরকার। নোংরা রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয় বিজেপি। এই পার্টি সবসময় স্বচ্ছ রাজনীতি করতে চায়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিধানসভায় বিনা পয়সায় র্যাম্প ওয়াক দেখেছে রাজ্যের মানুষ। অপর এক বিধায়ক কলের জল এনে গঙ্গা জল বলে বিধানসভায় ছিটিয়ে দিন। এর আগেও সেই বিধায়ক মানদণ্ড নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। এটাই তাদের সংস্কৃতি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজনীতির সংজ্ঞাই পাল্টে দিয়েছেন। সিপিএমের সংস্কৃতি যাতে বিজেপিতে প্রবেশ না করে সে নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’’