বিধানসভা ভিত্তিক ভোটের হার দেখতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, একাধিক আসনে ভোটের হার ছিল শতাংশেরও ৯০%, কোথাও আবার তা ৯৪% পর্যন্ত হয়েছে। আদিবাসী এলাকায় ভোটের হার যথেষ্ট নজরকাড়া। উল্লেখ্য, ঠিক এই আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাতেই ত্রিপুররাজ প্রদ্যোতকিশোর মাণিক্যের তিপ্রামোথার প্রভাব সর্বাধিক।
আরও পড়ুন: বিজেপি-ও 'ভয়' পায় এই 'রাজা'কে! রইল ত্রিপুরার 'কিং'-এর 'কিং মেকার' হয়ে ওঠার কাহিনি
advertisement
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে ভোটের হার ছিল প্রায় ৯১.০৮%। চলতি বিধানসভা ভোটে সেটা কমে এসে দাঁড়িয়েছে ৮৭.৬৯%। প্রায় সাড়ে তিন শতাংশেরও বেশি ভোট কমে যাওয়ায় রাজনৈতিক মহলে জোর আলোচনা।
নির্বাচন কমিশনের থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, নির্বাচনের দিন বিকেল ৪টে পর্যন্ত ত্রিপুরায় ভোট দানের হার প্রায় ৮১ শতাংশ ছুঁয়েছিল৷ সরকারি ভাবে বিকেল ৪ টেয় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ৪টের পরেও বহু ভোটকেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের লাইন ছিল চোখে পড়ার মতো। ফলে শেষ পর্যন্ত ভোট দানের হার আরও বেড়ে একসময় তা পৌঁছে যায় ৮৭.৬৯%।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টাও কাটল না! ভোট পরবর্তী হিংসায় রক্তারক্তি ত্রিপুরায়
পরিসংখ্যান বলছে, পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালে ত্রিপুরায় ভোটদানের হার ছিল ৯১ শতাংশের বেশি৷ সে বছর ফল বেরলে দেখা যায়, ২৫ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি৷
বিপুল ভোট দানের হার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার দিকে যায় বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের৷ যা ক্ষমতা বদলের বড় ইঙ্গিত৷ ফলে ত্রিপুরার ক্ষেত্রে কী হয়, এখন সেটাই দেখার। বিপুল ভোটদানের হার আসলে মানিক সাহা সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের ইঙ্গিত নাকি বিজেপি-র দাবি মতো সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির প্রতি আস্থা প্রকাশ, তা জানা যাবে আগামী ২ মার্চ৷ যদিও, বুথফেরত সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বিজেপি-র দিকেই পাল্লা ভারী। বাম-কংগ্রেস জোটের দিকে গেছে ১৬ শতাংশের মতো আসন।
ত্রিপুরায় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কর্মসংস্থান তৈরি করতে না পারা-সহ একাধিক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছিল ভোটের আগেই৷ তার পরেও বিজেপি-কেই এগিয়ে রাখছিলেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ৷ কিন্তু যেভাবে মানুষ সকাল থেকে ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে ভিড় জমিয়েছেন, তাতে বিজেপি নেতাদের কপালেও চিন্তার ভাঁজ পড়তে বাধ্য৷ সবথেকে বড় কথা, ত্রিপুরার আদিবাসী ভোট কোন দিকে যায়, তিপ্রামোথা কতখানি নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠতে পারে, সেদিকেও নজর রয়েছে গোটা দেশের৷ একই সঙ্গে বাম-কংগ্রেস জোট বিজেপি-কে কতটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারল, সেটাও দেখার৷