ঘটনা কী?
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত প্রপার্টি ডিলারের নাম লাখপাত সিং (৫৬), বাড়ি বেগমপুরে। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার সকালে বিজয় মণ্ডল পার্কে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন তিনি। তখন অভিযুক্ত বাবা-ছেলে প্রথমে ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে আঘাত করে, পরে দেশি পিস্তল দিয়ে গুলি চালায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে এআইআইএমএস ট্রমা সেন্টারে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
advertisement
২০০ বারেরও বেশি সাপের কামড় ! শরীরে তৈরি হয়েছে এক ধরনের ‘সুপার ইমিউনিটি’! কে ইনি?
পুলিশও নিরাপদ নন! ফাঁকা বাড়িতে পড়ে মহিলা কনস্টেবলের অনাবৃত দেহ! শরীর জুড়ে ক্ষত…
পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত বাবার সঙ্গে মৃতের দীর্ঘ ৯ বছরের বিবাদ ছিল। ২০১৬ সালে এক সংঘর্ষে অভিযুক্তকে মারধর করে পঙ্গু করে দিয়েছিল লাখপাত ও তার সহযোগীরা। সেই প্রতিশোধ নিতেই খুনের পরিকল্পনা করে বাবা-ছেলে। বিশেষভাবে পরিকল্পনা করা হয় যাতে ছেলেটি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে অপরাধ করে, ফলে নাবালক হিসেবে বিচার পায়।
পুলিশ ৫৫ কিলোমিটার জুড়ে ৬৫০টিরও বেশি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে। তাঁদের বাইক ও ক্রিকেট ব্যাট উদ্ধার হলেও হত্যার অস্ত্র পিস্তল এখনও মেলেনি।
প্রতীকী ছবি
আইন কী বলে?
জুভেনাইল জাস্টিস (কেয়ার অ্যান্ড প্রোটেকশন) আইন ২০১৫ অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে যে কোনও অভিযুক্তকে নাবালক ধরা হয়। নাবালকের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া যায় না।
তবে ১৬ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে কেউ যদি খুন, ধর্ষণ বা জঙ্গি কার্যকলাপের মতো গুরুতর অপরাধ করে, তবে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড অভিযুক্তের মানসিক পরিপক্বতা যাচাই করবে। বোর্ড যদি মনে করে অভিযুক্ত তার কাজের পরিণতি বুঝে অপরাধ করেছে, তাহলে তার বিচার সেশন কোর্টে হবে।
তবুও সর্বোচ্চ সাজা হবে নাবালক আইন অনুযায়ী।
সুপ্রিম কোর্ট কী বলেছে?
Union of India vs. A. Kumar (2016): ১৮ বছরের নিচে কোনও অভিযুক্তকে ফাঁসি দেওয়া যাবে না।
Shilpa Mittal vs. State (2020): সাত বছরের কম শাস্তিযোগ্য অপরাধ ‘গুরুতর’ নয়। কিন্তু খুনের মতো মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধ গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
Subramanian Swamy vs. Raju (2014): নির্ভয়া কাণ্ডে আদালত জানিয়েছিল, ১৮ বছরের নিচে অভিযুক্তকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে ফাঁসি দেওয়া যাবে না। তাই নির্ভয়া মামলার নাবালক অভিযুক্ত তিন বছরের সাজা খাটার পর ছাড়া পায়।
এই ঘটনায় প্রযোজ্য কী?
খুনের সময় ছেলেটির বয়স ছিল ১৮ হওয়ার ১৪ ঘণ্টা আগে। তাই আইনের চোখে সে এখনও নাবালক। এর মানে, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে না। সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে তিন বছর সংশোধনাগারে। যদি বোর্ড মনে করে সে ‘পরিণত’ হয়ে সচেতনভাবে অপরাধ করেছে, তবে কেস প্রাপ্তবয়স্ক আদালতে যাবে, কিন্তু সেক্ষেত্রেও যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে না।