শৈশব থেকেই ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন ছিল রামলালের। ফলে তখন থেকেই শুরু হয়েছিল লড়াইটা। দারিদ্রের সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই। বাবা দিনমজুর। বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও অর্ধেক সময়ই বিদ্যুৎ থাকত না। এর পর রামলাল ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াকালীন মাত্র ১১ বছর বয়সেই তাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছিল পরিবারের জোরাজুরিতে। স্ত্রী-ও সমবয়সী। বাল্য বিবাহের পরে চলতে থাকে পড়াশোনা। তবে দশম শ্রেণীর পাঠ শেষ করার পরেই বাড়ি থেকে পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ আসতে থাকে। আসলে মানুষের পিছিয়ে পড়া অন্ধকারাচ্ছন্ন ভাবনার কারণে লেখাপড়ার সফরটা ততটাও সহজ ছিল না রামলালের জন্য।
advertisement
তিনি জানান, পড়াশোনা করতে চেয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী-ও। কিন্তু দশম শ্রেণীর পরে তাঁকেও পড়াশোনা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। তবে স্বামীর পড়াশোনার জন্য নিজের ইচ্ছেটাকেও বিসর্জন দিয়েছিলেন তিনি। স্বামীর যাতে পড়াশোনা করতে অসুবিধা না হয়, তার জন্য শ্বশুরবাড়ির দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন- টেবিলে শুয়ে শুয়ে এসব কী! বড়লোকদের আজব খেয়ালখুশির রহস্য ফাঁস করলেন সুপারইয়টের কর্মী
পরিবারের চাপে রামলালের পড়াশোনা প্রায় বন্ধই হতে বসেছিল। কিন্তু উদয়পুরে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। মূলত রামলালের বাবাই চাইতেন না, ছেলে আরও পড়ুক। কিন্তু এক বন্ধুর বাবা এসে বোঝানোর পরে ছেলের পড়াশোনায় আর্থিক সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। পরে অবশ্য ধার করেও পড়াশোনা করিয়েছেন ছেলেকে।
রামলাল যেহেতু বরাবরই ডাক্তার হতে চাইতেন, তাই তিনি নিট পরীক্ষার জন্য কোচিং নিতেন কোটায়। ২০১৯ সালে ৮১ শতাংশ নম্বর নিয়ে দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন রামলাল। তবে প্রথম বারেই নিট পরীক্ষায় সাফল্য আসেনি। তবে পঞ্চম বারে সফল হয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ওই তরুণ। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৩২। এসসি ক্যাটাগরিতে তাঁর র্যাঙ্ক ছিল ৫১৩৭। ফলে পূরণ হয়েছে রামলালের স্বপ্ন। আবার পরিবারেও খুশির বন্যা। কারণ নিট পরীক্ষার ৬ মাস আগেই তাঁর ঘর আলো করে এসেছে এক কন্যা সন্তান!