এটা কীভাবে হল?
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে পেরিওস্টিয়াল লিফট নামক একটি অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম ব্যবহার করে স্যালাইনের বোতলটি খোলা হয়েছিল, যা পরে আলগাভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। একই বোতল অন্যান্য রোগীদের ক্ষেত্রে ফের ব্যবহার করা হয়েছিল। কমপক্ষে ১০ জন সংক্রমিত হয়েছিলেন এবং তাঁদের মধ্যে আটজন মারা গিয়েছিলেন, যার ফলে মৃত্যুর হার ৮০% হয়ে ওঠে।
advertisement
গবেষণার প্রধান লেখক, সিএমসি ভেলোরের ডাঃ অ্যাঞ্জেল মিরাক্লিন থিরুগনানাকুমার বলেন, রোগীদের মুখ পরিষ্কার করার জন্য সংক্রমিত স্যালাইন ব্যবহার করার সময় ব্যাকটেরিয়া স্নায়ুপথ দিয়ে প্রবেশ করে। এর ফলে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়। আরও পরীক্ষায় দেখা গেছে যে ব্যাকটেরিয়ার একটি জিন রয়েছে যা মস্তিষ্ককে আরও সক্রিয়ভাবে আক্রমণ করে।
নিউরোমেলিওডোসিস কী?
নিউরোমেলিওডোসিস হল মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডের একটি গুরুতর সংক্রমণ যা বার্কহোল্ডেরিয়া সিউডোম্যালেই নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয় । এই ব্যাকটেরিয়া সাধারণত গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে দূষিত মাটি এবং জলে পাওয়া যায়।
লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
জ্বর
মাথাব্যথা
অসংলগ্ন বা অস্পষ্ট কথাবার্তা
ঝাপসা দৃষ্টি
কিছু ক্ষেত্রে, মুখের পক্ষাঘাত
প্রসঙ্গত জুলাই ২০২২ থেকে এপ্রিল ২০২৩ এর মধ্যে, গবেষকরা মোট ২১ টি কেস খুঁজে পেয়েছেন। এর মধ্যে ১০ জন রোগী ডেন্টাল ক্লিনিকে গিয়েছিলেন এবং মোট ৯ জন মারা গেছেন। বেশিরভাগ কেসই ছিল তিরুপাত্তুর জেলার। যারা ক্লিনিকে গিয়েছিলেন তারা দ্রুত মারা গিয়ছেন৷ মাত্র ১৬ দিনে লক্ষণ থেকে মৃত্যুতে এবং ৯ দিনে হাসপাতালে ভর্তি থেকে মৃত্যুতে পৌঁছেছেন তাঁরা। বিপরীতে, ক্লিনিকে না গিয়ে মারা যাওয়া একমাত্র ব্যক্তি লক্ষণ শুরু হওয়ার ৫৬ দিন এবং হাসপাতালে ভর্তির ৩৮ দিন পরে মারা গিয়েছেন।
কর্মকর্তারা কী করেছিলেন?
৯ মে ২০২৩ তারিখে, সিএমসি আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা জানায়। চার দিন পর, তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এই অঞ্চলের হাসপাতাল এবং ক্লিনিকগুলির সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। ডাক্তারদের একটি দল এই ক্লাস্টারটি তদন্ত শুরু করে। তবে, নমুনা সংগ্রহ করার আগেই, জনসাধারণের অভিযোগের পর ডেন্টাল ক্লিনিকটি জীবাণুমুক্ত করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবুও, বিজ্ঞানীরা স্যালাইনের বোতল থেকে একটি নমুনায় ব্যাকটেরিয়া খুঁজে পেতে সক্ষম হন। অন্যান্য খোলা স্যালাইনের বোতলগুলি পরিষ্কার ছিল।
আরও পড়ুন : সাফল্য এনে দিল শশী থারুরের কূটনীতি, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তানের প্রতি ‘ভালবাসা’ ভুলতে বাধ্য হল এই দেশ !
তাঁরা আর কী কী পেলেন?
যে সব রোগী ডেন্টাল ক্লিনিকে যাননি তাদের বেশিরভাগেরই লালা গ্রন্থি, গাল বা লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়ার লক্ষণ দেখা গেছে। কিন্তু যাঁরা গিয়েছিলেন তাদের মুখ ফুলে যাওয়া এবং নরম টিস্যুতে সংক্রমণের মতো আরও গুরুতর লক্ষণ দেখা গিয়েছে, সম্ভবত দূষিত স্যালাইন গিলে ফেলার কারণে। তামিলনাড়ুর জনস্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ টিএস সেলভাবিনায়গম বলেছেন যে এই প্রাদুর্ভাব এখন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ‘‘এই ঘটনা সমস্ত স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের আরও একবার মনে করিয়ে দিল যে সব সময় জন্য সঠিক সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অনুসরণ করা অত্যাবশ্যকীয়৷’’