নয়াদিল্লি: কমিশনের কাজে যৌক্তিকতা রয়েছে, কিন্তু, সময়টা ঠিক নয় বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধন প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট৷ প্রসঙ্গত, ক’দিন আগেই বিহারের এই ভটার তালিকা সংশোধন প্রতিক্রিয়া নিয়ে সরব হয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে এই ভাবে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ আসলে বিজেপি-র ‘চাল’ বলে মনে করছেন বিরোধীরা৷ এ নিয়ে এককাট্টা হে দেখা গিয়েছে ইন্ডিয়া জোটকেও৷
advertisement
বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের বিরোধিতা করে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছেন অনেকে৷ সেই আবেদনেরই শুনানি ছিল বৃহস্পতিবার৷ সেখানে আবেদনকারীদের পক্ষে হাজির ছিলেন প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল, অভিষেক মনু সিংভি ও গোপাল শঙ্কর নারায়ণন। কমিশনের তরফে সওয়াল করেন কেকে বেণুগোপাল, রাকেশ দ্বিবেদী এবং মনিন্দর সিং।
আবেদনকারীদের যুক্তি— ২০০৩ সালকে কাট-অফ ধরে নাগরিকত্ব যাচাই করা হচ্ছে, যা জনপ্রতিনিধিত্ব আইন এবং নির্বাচন বিধির কোথাও উল্লেখ নেই।
তাঁদের দাবি, সেখানে আধার কার্ড, ভোটার কার্ডের মতো নথিকে বৈধ পরিচয় হিসেবে মানা হচ্ছে না। অথচ যে নথিই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বিহারবাসীর কাছে রয়েছে। অভিভাবকের নাগরিকত্ব প্রমাণ দিতে বলা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর ও একতরফা৷ অভিষেক মনু সিংভি আবেদন জানিয়েছেন, অবিলম্বে এই প্রক্রিয়াকে স্থগিত করে সব পক্ষকে নোটিস জারি করার হোক৷
এদিন বিহারে ভোটার তালিকায় নির্বাচন কমিশনের স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন (SIR) চালুর সিদ্ধান্ত নিয়ে একগুচ্ছ প্রশ্ন করে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি সুধাংশু ধূলিয়া ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে চলে এই মামলার শুনানি৷
সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন— কমিশনের এই রিভিশন সংবিধান অনুযায়ী হলেও, কেন তা নির্বাচনের মুখেই করা হচ্ছে? আদালতের পর্যবেক্ষণ— এত বড় প্রক্রিয়া ভোটের মুখে নয়, আগে শুরু করা উচিত ছিল। আধারকার্ড এমনকি ভোটার কার্ডকেও কেন বৈধ নথি হিসেবে গ্রহণ করা হচ্ছে না? সেই প্রশ্নও তোলে শীর্ষ আদালত৷
কমিশন জানিয়েছে— আধার নাগরিকত্বের প্রমাণ নয় ৷ তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার আগে আদালতকে জানানো হবে, কারও নাম ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়ার উদ্দেশ্য নেই কমিশনের।
কমিশনের যুক্তি— আবেদনকারীদের অনেকেই শুধুমাত্র তত্ত্ব নিয়ে মামলা করেন৷ তবে আদালত জানিয়েছে— এ যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ বিষয়টি ভোটাধিকার সংক্রান্ত।