TRENDING:

গাড়ি চালকের মেয়ে বিচারকের আসনে! জুডিসিয়াল সার্ভিসেস পরীক্ষায় তাক লাগানো ফল রাজস্থানের কার্তিকার

Last Updated:

মনের কোণে পোষা ছিল একটা স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্নই বাস্তব হয়ে ধরা দিয়েছে কার্তিকার জীবনে। কার্তিকা গেহলট, রাজস্থান হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির গাড়ি চালকের মেয়ে, এ বছর রাজস্থান জুডিসিয়াল সার্ভিসেস পরীক্ষায় সফল হয়েছেন।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
জয়পুর: হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির গাড়ি চালাতেন বাবা। সেই সূত্রে শামলা-আঁটা মানুষগুলোকে অনেক সময়ই কাছ থেকে দেখেছেন কার্তিকা। ছোটবেলা থেকেই তাঁকে যেন হাতছানি দিয়ে ডাকত হাই কোর্টের অলিন্দ। মনের কোণে পোষা ছিল একটা স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্নই বাস্তব হয়ে ধরা দিয়েছে কার্তিকার জীবনে। কার্তিকা গেহলট, রাজস্থান হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির গাড়ি চালকের মেয়ে, এ বছর রাজস্থান জুডিসিয়াল সার্ভিসেস পরীক্ষায় সফল হয়েছেন। বিচারক হওয়া এখন হয় তো শুধু সময়ের অপেক্ষা।
advertisement

দিন কয়েক আগেই রাজস্থান জুডিসিয়াল সার্ভিসেস পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। ৬৬তম স্থান অর্জন করেছেন কার্তিকা। ২৩ বছরের তরুণী তাঁর এই সাফল্য সম্পর্কে জানান, একমাত্র স্বপ্ন ছিল কালো কোট পরে বসা, বিচারকের আসনে। আত্মবিশ্বাসী কার্তিকা জানতেন, এ স্বপ্ন একদিন পূরণ হবেই।

কার্তিকা বলেন, ‘‘আমার বাবা গত ৩১ বছর ধরে রাজস্থানের প্রধান বিচারপতির গাড়ি চালক। এই কারণে, আমি খুব অল্প বয়সেই ওই কালো কোটের অনুরাগী হয়ে উঠেছিলাম। ’’

advertisement

আরও পড়ুন- ডিএ মামলায় হার; ‘যারা সরকারের নীতি, সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়িত করে তাদেরই দুয়ারে পৌঁছতে পারেনি এই সরকার’...কটাক্ষ বিজেপির

বেশিরভাগ শিশুই জীবনের এক একটি পর্যায়ে তার স্বপ্ন বদলে ফেলে। কিন্তু কার্তিকা ছোট থেকেই অবিচল। আইনের প্রতি তাঁর আগ্রহ তাঁকে অনেক বেশি মনোযোগী করেছে বলেও তিনি মনে করেন। চার ভাইবোনের মধ্যে মেজো কার্তিকা। তাঁর আর এক ভাই পাহানও আইনের প্রতি আগ্রহী।

advertisement

কিন্তু কার্তিকার সাফল্যের পথটা খুব সহজ ছিল না। যোধপুরের সেন্ট অস্টিন স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করার পর তিনি যোধপুরের জয় নারায়ণ ব্যাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের পাঠ শেষ করেছেন। কার্তিকা বলেন, ‘‘আইনের প্রতি ছোট থেকেই আগ্রহী ছিলাম। কিন্তু বিষয়টাকে আরও ভালোবেসে ফেললাম পঞ্চম এবং ষষ্ঠ সিমেস্টারে সময় থেকে। সে সময় জেলা আদালতে ইন্টার্নশিপ শুরু করি।’’ কিন্তু তার পরেই শুরু হয়ে যায় কোভিড অতিমারীর দাপট। লকডাউনে সব বন্ধ হয়ে গেলে শুরু হয় অনলাইনে প্রস্তুতি, প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য।

advertisement

আরও পড়ুন- ধাওয়া করে খুন প্রিয়াঙ্কাকে, পানভেল স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে স্তম্ভিত পুলিশ!

পড়াশোনা করতে ভালোবাসেন কার্তিকা। কিন্তু নাওয়া-খাওয়া ভুলে পড়াশোনা করার পক্ষপাতী তিনি নন। কার্তিকা তাঁর পরীক্ষা প্রস্তুতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ‘প্রতিদিনের পড়াশোনায় একটা ধারাবাহিকতা ছিল সেটা সত্যি। কিন্ত মুখ গুঁজে পড়াশোনা আমি করতে পারিনি।’ দিনে তিন থেকে চার ঘণ্টা পড়াশোনা করতেন কার্তিকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একটু কড়া তাঁকে হতেই হয়েছিল, স্বীকার করেছেন কার্তিকা। পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার হয়ে যাওয়ার পরে দিনে ১০-১২ ঘণ্টা পড়াশোনা করতেন।

advertisement

লক্ষ্য স্থির ছিল, ‘যে ভাবেই হোক সফল আমায় হতেই হবে। তাই পড়ার সময়ও বেড়ে গিয়েছিল। আর সত্যি এই সময়ই সব থেকে ভাল প্রস্তুতি হয়েছিল’, জানান কার্তিকা। সঙ্গীতের প্রতি অনুরাগী আইনের ছাত্রী জানান, নানা ধরনের গান, যন্ত্র সঙ্গীত তাঁর মনোনিবেশে সাহায্য করেছিল। এমনকি, নানা ধরনের মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতেও সাহায্য করেছে গান।

কার্তিকা মনে করেন, সব মহিলাদেরই আইনের জ্ঞান থাকা আবশ্যিক। আইন পড়া মহিলাদের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি সম্প্রতি শুনেছি কিছু বাবা-মা না কি চান না তাঁদের মেয়েরা আইন নিয়ে পড়াশুনা করুন। কারণ তাঁরা ভয় পান আইন পড়া মেয়ের আর বিয়ে দিতে পারবেন না। তবে আমি বিশ্বাস করি যে আরও বেশি সংখ্যক মহিলার আইন পড়া উচিত যাতে তাঁরা নিজেদের অধিকার সম্পর্কে আরও ভাল করে জানতে পারেন, স্বাধীন ও স্বনির্ভর জীবন যাপন করতে পারেন।’’

তবে শুধু নারী নয়, কার্তিকা মনে করেন সব মানুষেরই আইন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকা উচিত। যা মানুষকে দৈনন্দিন জীবনে তাঁর অধিকারের জন্য লড়াই করতে সাহায্য করবে।

কার্তিকা তাঁর সাফল্যের কৃতিত্ব তাঁর পরিবার এবং এলাহাবাদ হাই কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুরকে দিতে চান। পরিবারের সমর্থন ও সহযোগিতার কারণেই পরীক্ষায় পাস করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি। এ ছাড়াও, এলাহাবাদ হাই কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুরের থেকেও অনেক পরামর্শ তিনি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন পর্যায়ে সাহায্য করেছেন। একই সঙ্গে কার্তিকার বাবা রাজেন্দ্র গেহলট বলেন, কার্তিকাকে সব রকম ভাবে অনুপ্রাণিত করা এবং সমর্থন করার ক্ষেত্রে মায়ের বিশেষ অবদান রয়েছে।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
দীপাবলির পরেই শুরু হয় ভৈলিনি-দেওসি! কীভাবে এই উৎসব পালন করে জানেন?
আরও দেখুন

নিজের কাজের বিষয়ে খুবই মনোযোগী কার্তিকা। সচেতন ভাবেই নিজেকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে রাখেন তিনি। ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে কার্তিকার কোনও অ্যাকাউন্ট নেই। নিত্য প্রয়োজনে, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে শুধু হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন তিনি।

বাংলা খবর/ খবর/দেশ/
গাড়ি চালকের মেয়ে বিচারকের আসনে! জুডিসিয়াল সার্ভিসেস পরীক্ষায় তাক লাগানো ফল রাজস্থানের কার্তিকার
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল