“নিউজ18 বাংলার প্রতিনিধিকে কলকাতা বিমানবন্দরের ভেতরে লাগেজ বেল্টে অপেক্ষা করার সময় একটানা বলে গেলেন সন্তোষজয়ী বাংলা দলের নায়ক রবি হাঁসদা। দিনকয়েক আগে অপরিচিত হলেও বাংলাকে সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়ন করার পর নায়ক হয়েছেন বর্ধমান ভাতারের রবি।
আরও পড়ুন- সৌরভের বাড়িতে বিয়ের সানাই! শ্বশুরমশাই হয়ে গেলেন দাদা! বছরের শুরুতেই বড় সুখবর
advertisement
রবির কিরণে ভারত সেরা বাংলা দল। মহম্মদ হাবিবের ৫৪ বছরের রেকর্ড ভেঙে টুর্নামেন্টে বারোটি গোল করেছেন। ফাইনালেও রবির গোলে বাংলা কেরলকে হারিয়েছে। তাই হায়দরাবাদ থেকে কলকাতায় আসার পরই রবিকে ঘিরে বিমানবন্দরে বাড়তি উচ্ছ্বাস সমর্থকদের।
ফুটবল জীবনে এত ক্যামেরার ফ্ল্যাশ রবি আগে দেখেননি। বিমানবন্দরে তাই স্ত্রী ও ছোট্ট কন্যাকে কোলে নিয়ে কিছুটা হতভাগ হয়ে পড়লেন। তার মধ্যেই নিউজ18 বাংলাকে সাক্ষাৎকার দিলেন। সেখানেই স্পষ্ট করে বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করতে চাই চাকরির জন্য। ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে চাকরির প্রয়োজন। চাকরি হলে আরও ভালো করে খেলতে পারব।
আরও পড়ুন- মদ কেড়ে নিল সব! বিনোদ কাম্বলি এবার হারাবেন জীবনের সব থেকে দামি জিনিস!
ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকেও নিজের আবেদনের কথা জানাতে চান রবি। পাশাপাশি রবি স্বপ্নের কথাও জানালেন। আইএসএলের সঙ্গে জাতীয় দলের হয়েও মাঠে নামতে চান তিনি। পছন্দের ক্লাব জানতে চাইলে হাসিমুখে সহজেই উত্তর এল, মোহনবাগান। সবুজ মেরুনের রিজার্ভ দলের অফার রয়েছে রবি হাঁসদার কাছে। তবে বাঙালি স্ট্রাইকার সিনিয়র দলে খেলতে চান।
একটি সন্তোষ ট্রফিতে এক ডজন গোল। তাও আবার বাঙালি স্ট্রাইকারের পা থেকে। ফুটবল মানেই সংগ্রামের গল্প। আইএসএল পরবর্তী ভারতীয় ফুটবলে সেই ছবিটা আরও কঠিন। স্বীকৃতির নিশ্চয়তা নেই। প্রচারের সার্চ লাইট পড়ার জো নেই। তবে বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন করার পর রবির গল্পটা পাল্টেছে।
সন্তোষ ট্রফিতে সর্বোচ্চ গোলদাতার লড়াইয়ের গল্পটা মানুষের সামনে উঠে এসেছে। পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার অন্তর্গত মশারু গ্রামের আদিবাসী পরিবারের ছেলে রবি জনাইয়ের এই ফুটবল কর্তার হাত ধরে কলকাতা লিগে কাশীপুর সরস্বতী ক্লাবে সই করেছিলেন রবি। সেখান থেকে রেনবো ঘুরে কাস্টমসের হয়ে খেলে বাংলা দলের হয়ে জাতীয় গেমসে প্রতনিধিত্ব। এবারের মতো সেখানেও বাংলাকে জাতীয় গেমসে চ্যাম্পিয়ন করায় বড় ভূমিকা ছিল।
যদিও তারপরও ছবিটা উজ্বল হয়নি। সন্তোষ ট্রফির বাছাই পর্বে খেলতে গিয়ে ২০২৩ সালের শুরুতে হাঁটুতে চোট। যার জেরে বছরটাই মাঠের বাইরে কেটেছিল। রবির সেই সময় রুজিরোজগার ছিল ‘খেপ’ খেলা। চোটের ধাক্কায় সেটাও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভীষণই হতাশায় ডুবে গিয়েছিলেন।
ওই সময়ে পরিত্রাতা হন কাস্টমস ক্লাবের কর্তারা। কলকাতা লিগে ৯ গোল করার পর সন্তোষ ট্রফিতে একডজন রবি-ম্যাজিক। সুনীল ছেত্রীর ভক্ত রবি এবার সামনে তাকতে চান। বাবাকে হারানোর আক্ষেপ ওঁর চোখে মুখে। এর মাঝেই কোচ সঞ্জয় সেনের হাতে পড়ে রবি সন্তোষ ট্রফিতে নিজেকে নিংড়ে দিয়েছেন। ২০২৫ সালে বাংলার ফুটবল এখন নতুন রবির আলোয় ভরে ওঠার অপেক্ষায়।