রাইজিং ভারত সামিট ২০২৪-এ স্মৃতি বলেন, “উনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত ‘শক্তি’-র কথা তিনি উল্লেখ করছেন না। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের আজকালকার সময়ে তাঁর কথার আসল অর্থ আর দেশবাসীর সামনে গোপন নেই। এই প্রথম নয়, এর আগেও উনি আমার ধর্ম হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। স্মৃতি আরও বলেন, গোটা দেশ তাঁকে বলতে শুনেছে যে, তিনি শক্তির সঙ্গে লড়াই করতে চান। আর শক্তি হিন্দু ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত। একজন হিন্দু হিসাবে আমি গান্ধিকে বলতে চাই যে, এতদিন ধরে যাঁরা আমার ধর্মকে চ্যালেঞ্জ করেছেন, তাঁরা ধ্বংসের মুখ দেখেছেন। রামায়ণ, গীতা এবং মহাভারত পাঠ করলে এই বিষয়ে হয়তো সঠিক ধারণা উনি পেয়ে যেতেন।”
advertisement
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি খোলাখুলি চ্যালেঞ্জ করার পরে বিজেপিকে একহাত নিয়ে রাহুল গান্ধি ব্যাখ্যা করেন যে, “কোনও ভাবে অথবা অন্য ভাবে আমার কথাগুলোকে ঘুরিয়ে সব সময় তার অর্থ পরিবর্তন করার চেষ্টা করে বিজেপি।” সেই সময় তিনি জোর দিয়ে এ-ও বলেন যে, “সমস্ত প্রতিষ্ঠান, সংবাদমাধ্যম, ইন্ডাস্ট্রি এবং গোটা দেশের সাংবিধানিক কাঠামোকে গ্রাস করেছে একটি শক্তি।”
আরও পড়ুন: মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই স্বরূপের বাড়িতে সাতসকালে আয়কর হানা! কী অভিযোগ?
এই ব্যাখ্যার আগে অবশ্য ওই কংগ্রেস নেতা ‘শক্তি’-র বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেশ জুড়ে রীতিমতো ঝড় তুলে দিয়েছিলেন। এরপরেই প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বলতে শোনা যায় যে, তিনি নিজের জীবন দিয়ে শক্তি রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাবেন।
এদিকে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে অমেঠি কেন্দ্রে রাহুল গান্ধিকে পরাজিত করেছিলেন স্মৃতি ইরানি। তিনি রাহুলকে নিশানা করে বলেন যে, “কিন্তু উনি যদি সেক্যুলার বা ধর্মনিরপেক্ষও হন, তাহলে ধর্মের আড়ালে থেকে তাঁর লড়াই করা একেবারেই উচিত নয়। বরং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর লড়াই করা উচিত।”
এখানেই শেষ নয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ওই কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে রীতিমতো হুঙ্কার দিয়ে বলেন যে, ‘শক্তি’ বলতে কী বোঝাতে চাইছেন, তা স্পষ্ট ভাবে তাঁর বলা উচিত। স্মৃতি ইরানির প্রশ্ন, “প্রধানমন্ত্রী মোদি দেশের চারটি শক্তির কথা বলেছেন: নারী শক্তি, যুব শক্তি, কৃষি শক্তি এবং যে শক্তি এখন উন্নীত হচ্ছে। এর মধ্যে কার সঙ্গে রাহুল গান্ধি লড়তে চাইছেন?”
২০১৯ সাল পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের অমেঠি ছিল কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। প্রায় ৫৫ হাজার ভোটে রাহুল গান্ধিকে পরাস্ত করেছিলেন স্মৃতি ইরানি। আগের সাধারণ নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে একমাত্র রায়বরেলি আসনে বিপুল জয়লাভ করেছিল কংগ্রেস। যা এখন খালি করে দিয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট সনিয়া গান্ধি।
ওই শীর্ষ সম্মেলনে স্মৃতি ইরানি আরও বলেন, “জয় এবং পরাজয় নির্বাচনী রাজনীতির অঙ্গ। কিন্তু একজন নেতাকে যে বিষয়টা সংজ্ঞায়িত করে, সেটা হল তাঁদের নিজেদের জনগণের মধ্যে তাঁদের নিজস্ব বিশ্বাস নিয়ে দাঁড়ানোর জন্য যথেষ্ট দৃঢ়তা কিংবা সাহস রয়েছে কি না। আর আমি মনে করি, যিনি পালিয়ে যান এবং নির্বাচনে জয় পাবেন কি না, তা নিয়ে আতঙ্কিত, তিনি একটি দেশকে ভাল কিছুর দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন না।” আবার আগামী মাসে শুরু হতে চলেছে লোকসভা নির্বাচন। আর সেই আসন্ন নির্বাচনে অমেঠি কেন্দ্র থেকে আরও একবারের জন্য স্মৃতি ইরানিকে টিকিট দিয়েছে বিজেপি। তবে ওই আসনে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: ভোটের মুখে আরও চাপে মহুয়া, তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ
সেই প্রসঙ্গে স্মৃতি ইরানি বলেন যে, “প্রায় ৪ লক্ষ দরিদ্র মহিলা অন্ধকারের আড়াল খুঁজছেন, যাতে তাঁরা সেই এলাকার একটি খোলামেলা অংশে একটু স্বস্তি পেতে পারেন। যে এলাকায় ৫০ বছর ধরে রাজত্ব করেছে ওই পরিবারটি। আপনারা যদি এটা দেখতেন, তাহলে আপনারাও আমার মতো ক্ষিপ্ত হতেন। এখানেই শেষ নয়, এই দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করছেন, এমন একটি অঞ্চলের প্রায় ৩ লক্ষ মানুষকে নিজেদের বাড়িতে পানীয় জল ছাড়া জীবনযাপন করতে যদি আপনারাও দেখতেন, তাহলে আপনিও আমার মতো বিরক্ত হতেন। আর যেখানে গান্ধি পরিবার ৫০ বছর ধরে রাজত্ব চালিয়েছেন, সেখানে যদি প্রায় ৪ লক্ষ মানুষকে আশ্রয়হীন দেখতেন….।”
স্মৃতি ইরানি জানান, তিনি ২০১৪ সালে প্রথম বার অমেঠিতে গিয়েছিলেন। তাঁকে সেই সময় একটি গুদামে ঘুমোতে হয়েছিল। এমনকী সেখানকার মানুষ ভয়ে ভয়ে কথা বলতেন। তাঁরা ভালবাসার কথা বলতেন না।
স্মৃতির বক্তব্য, “প্রায় ১৫ বছর ধরে অমেঠির সাংসদ ছিলেন রাহুল গান্ধি। আবার তাঁর মা সেখানে ইউপিএ চেয়ারপার্সন ছিলেন ১০ বছর ধরে। আবার তাঁর বন্ধু অখিলেশ যাদব সেখানে সরকার চালাচ্ছিলেন। স
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, অথচ সেখানে প্রথম কালেক্টরের অফিসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন অমিত শাহ। আবার প্রথম সিটি স্ক্যান মেশিন, প্রথম ডায়ালিসিস সেন্টার, প্রথম ব্লাড ব্যাঙ্ক, প্রথম পাসপোর্ট অফিস সমস্ত কিছুই এনেছিল মোদি সরকার।”