কার হাতে থাকবে দিল্লির আমলাদের নিয়ন্ত্রণ৷ কেন্দ্রীয় সরকার, নাকি রাজ্য৷ এ নিয়ে দীর্ঘ লড়াই চলছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সঙ্গে দিল্লির আম আদমি পার্টির সরকারের৷ বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থও হয়েছিল কেজরিওয়ালের দল৷ সেখানে স্বস্তিও মেলে৷ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় যে, পুলিশ, পাবলিক অর্ডার এবং জমি ছাড়া বাকি সব বিষয়েই রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত থাকবে। আদালতের নির্দেশে বলা হয়, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের হাতে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ থাকা প্রয়োজন।
advertisement
কিন্তু, এর পরেই একটি অর্ডিন্যান্স জারি করে কেন্দ্র৷ যার মাধ্যমে দিল্লির আমলা নিয়ন্ত্রণের রাশ ফের চলে আসে কেন্দ্রের হাতে৷ এবার লোকসভা এবং রাজ্যসভায় এই অর্ডিন্যান্স বাতিল করাই কেজরিওয়ালের একমাত্র অস্ত্র৷ তাই অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতা করার আবেদন জানিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে ইতিমধ্যেই আবেদন জানিয়েছেন কেজরি৷ এমনকি, নবান্নে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কথা বলেছেন৷
এদিন নীতীশ কুমারের ডাকা বিজেপি বিরোধী ১৫ দলের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের রাহুল গান্ধি, মল্লিকার্জুন খাড়্গে৷ ছিলেন আম আদমি পার্টির প্রতিনিধিও৷ সেখানেই কংগ্রেসকে অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতা প্রসঙ্গে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে বলে আম আদমি পার্টি৷ আর এখানেই শুরু বিরোধ৷
আরও পড়ুন:বিজেপি বিরোধিতায় ‘আমরা এক’, একতা প্রতিষ্ঠায় নতুন উদ্যোগ নীতীশের
এদিন বৈঠক শেষে একটি বিবৃতি জারি করে আম আদমি পার্টি জানায়, এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ১৫টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১২টি দলের প্রতিনিধি রয়েছে রাজ্যসভায়৷ তার মধ্যে একমাত্র কংগ্রেস ‘ব্ল্যাক অর্ডিন্যান্স’-এর বিরোধিতার বিষয়ে তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি৷ এমনকি, পঞ্জাব ও দিল্লির কংগ্রেস ইউনিট এই ইস্যুতে বিজেপি সমর্থন করার কথাই জানিয়েছে৷
বিবৃতিতে আপ দাবি করেছে, ‘ব্ল্যাক অর্ডিন্যান্স’-এর বিরোধিতা না করলে বিজেপি ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে৷ এমনকি, অন্যান্য গণতান্ত্রিক অধিকার হনন করতেও পিছপা হবে না৷ কিন্তু, আপ জানিয়েছে, কংগ্রেস নেতা এদিনের বৈঠকে আভাস দিয়েছেন, রাজ্যসভায় অর্ডিন্যান্স ইস্যুতে তাঁদের দল ভোটদান থেকে বিরত থাকতে পারে৷
আগামী জুলাইয়ে শিমলায় পরবর্তী জোট বৈঠকের আয়োজন করতে চলেছে কংগ্রেস৷ শুক্রবারের বৈঠক শেষেই সেই কথা জানিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে৷ আম আদমি পার্টির বক্তব্য, এর মধ্যে কংগ্রেস যদি জনসমক্ষে এই ‘ব্ল্যাক অর্ডিন্যান্স’-এর বিরোধিতা না করে, যদি কংগ্রেসের ৩১ জন রাজ্যসভার সাংসদ এই অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতায় ভোট না দেন, তবে পরবর্তী বৈঠকে কংগ্রেস উপস্থিত থাকলে, তারা সেখানে থাকবে না৷
এবার এ নিয়ে কংগ্রেস নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবে নাকি, শুরুতেই ধাক্কা খাবে বিরোধী জোট তা অবশ্য সময়ই বলবে৷ তবে, বিরোধী জোটের পথটা যে খুব একটা সুগম নয়, সে কথা বলা বাহুল্যই৷