কিন্তু প্যাসেঞ্জার ট্রেনকে এক্সপ্রেস করার কারণ কি?
রেল সূত্রে খবর, একদিকে গতি বাড়ায়, চলবে বেশি ট্রেন। অতিরিক্ত পণ্যবাহী ট্রেন চালানো যাবে। বর্তমানে কয়লা, আকরিক নিয়ে দ্রুত পণ্য পৌঁছবে। পণ্যবাহী ট্রেন চললে বাড়বে আয়। যার জেরে এক ধাক্কায় বেড়ে গেল ট্রেনের ভাড়া। বাড়তি ভাড়া দিয়ে যেমন যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রীদের, তেমনই এক্সপ্রেস ট্রেন হয়ে যাওয়ায় কমল ট্রেনের গতি। রেল সূত্রে খবর, এর পরিবর্তনের জেরে কমে গেল স্টপেজ। আর তার জেরেই ব্যাপক ক্ষুব্ধ জঙ্গলমহলের বাসিন্দারা। দক্ষিণ পূর্ব রেলের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার যাত্রীরা।
advertisement
আরও পড়ুন: রক্তচক্ষু নিয়ে ফুঁসছে 'অশনি'! আবহাওয়ার বদল শুরু! কোথায়-কবে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়?
দক্ষিণ পূর্ব রেল সূত্রে খবর, আদ্রা-হাওড়া শিরোমণি প্যাসেঞ্জার ট্রেন হয়ে গেল আদ্রা-হাওড়া শিরোমণি এক্সপ্রেস৷ হাওড়া-চক্রধরপুর প্যাসেঞ্জার ট্রেন হয়ে গেল হাওড়া-চক্রধরপুর এক্সপ্রেস। এ ছাড়া খড়গপুর থেকে গোমো, খড়গপুর থেকে হাতিয়া, খড়গপুর থেকে গোমো প্যাসেঞ্জার ট্রেন হয়ে গেল এক্সপ্রেস ট্রেন। একাধিক প্যাসেঞ্জার ট্রেনের এ ভাবে এক্সপ্রেস ট্রেন হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার যাত্রীরা। তার প্রধান কারণ ভাড়া বেড়ে যাওয়া। প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ক্ষেত্রে বেস ফেয়ার বা নূন্যতম ভাড়া ছিল ১০ টাকা। এক্সপ্রেস ট্রেন হয়ে যাওয়ায় সেই ভাড়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ টাকা। যার ফলে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। এই সব ট্রেনের ওপরে খড়গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার একটা বড় অংশের যাত্রী নির্ভর করে থাকেন৷ দৈনিক রোজগারের ওপর যারা নির্ভরশীল তাদের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁদিফাটা রোদ নাকি স্বস্তির বৃষ্টি! সপ্তাহান্তে কেমন থাকবে রাজ্যের আবহাওয়া? রইল পূর্বাভাস...
কিন্তু কেন প্যাসেঞ্জার ট্রেনকে এক্সপ্রেস ট্রেন করে দেওয়া হল?
সূত্রের খবর, এক্সপ্রেস ট্রেন হয়ে যাওয়ার ফলে ভাড়া থেকে রেলের আয় বাড়বে। এক্সপ্রেস ট্রেন হয়ে যাওয়ায় গতি বাড়বে ট্রেনের৷ ফলে একটি নির্দিষ্ট সেকশনে যত সংখ্যক ট্রেন চলে তার চেয়ে বেশি ট্রেন চালানো সম্ভব হবে। আর এখানেই লুকিয়ে আসল বিষয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের৷ রেল বিশেষজ্ঞদের দাবি, সেকশন ক্যাপাসিটি আছে৷ ধরে নেওয়া যাক একটি সেকশনে দিনে ২৪টি ট্রেন চলে। তার মানে প্রতি ৬০ মিনিট অন্তর এই সেকশনে ট্রেন চলে। এখন যদি প্যাসেঞ্জার ট্রেনকে এক্সপ্রেস ট্রেন করে দেওয়া হয়৷ তাহলে ট্রেনের গতি বাড়বে। গতি বাড়িয়ে দেখা গেল প্রতি ৬০ মিনিটের বদলে প্রতি ৫০ মিনিট অন্তর ওই সেকশনে ট্রেন চালানো যাচ্ছে। তাহলে দিনে ২৪০ মিনিট সময় বাঁচল। এই সময়ে আরও চারটি ট্রেন চালিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। সেই ট্রেন মেল, এক্সপ্রেস, প্যাসেঞ্জার বা পণ্যবাহী হতে পারে।
ভারতীয় রেলের যাত্রীবাহী ট্রেন চালিয়ে লাভ হয় না। রেলের লাভ পণ্যবাহী ট্রেন চালানোয়। ফলে যত সংখ্যক পণ্যবাহী ট্রেন চালানো যাবে, তত অর্থনৈতিক লাভ হবে রেলের। দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কেএস আনন্দ জানিয়েছেন, আমরা স্টিল প্ল্যান্ট, থার্মাল প্ল্যান্টে কয়লা, লৌহ আকরিক প্রভৃতি সরবরাহ করি৷ ফলে অবশ্যই বেশি সংখ্যক ট্রেন চালাতে পারলে সুবিধা হবে। অন্যদিকে, দেশের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে যথাযথ ভাবে কয়লার জোগান দিতে গিয়ে প্রচুর ট্রেন চালানো হচ্ছে৷ এই সময়ের ব্যবধানে সেই ট্রেনও চালানো যাবে। তবে যে প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ওপর মানুষ বেশি করে নির্ভরশীল ছিল তার বদলের কারণ কি? দক্ষিণ পূর্ব রেল গোটাটাই রেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে৷
ABIR GHOSHAL