এ সবের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় রেলের একটি বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে পড়ে৷ সেই বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, ১ জুলাই থেকে ফিরছে রেলে ছাড়। যদিও রেল বোর্ডের কর্তাদের দাবি, এমন কোনও বিজ্ঞপ্তিই জারি হয়নি৷ ফলে গোটা বিষয়টি নিয়ে ফের বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে ৷ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী জানিয়েছেন, আমরা কোনও বিভ্রান্তি ছড়াইনি। আমরা আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছি এখনই ছাড় নয়। করোনা এখনও থেমে যায়নি৷ কেন্দ্র থেকে জানায়নি৷ এই অবস্থায় ছাড় দিয়ে আমরা কোনও উৎসাহ দিতে চাইনা প্রবীণদের। ছাড় তুলে নেওয়ায় রেল মন্ত্রকের সিদ্ধান্তে অখুশি ছিলেন যাত্রীরা। তবে কেন্দ্রের ঘোষণা ছিল, বিশেষভাবে সক্ষম, পড়ুয়া ও রোগীদের ছাড় থাকছে আগের মতোই। করোনার ধাক্কায় কাবু হয়েছে দেশের অর্থনীতি। ক্ষতির মুখে পড়েছে রেলও। করোনাকালে স্পেশ্যাল ট্রেন চালু হলেও তুলে দেওয়া হয় সব রকম ছাড়। ভাড়ায় ছাড়ের কারণে রেলের উপর আর্থিক চাপ বাড়তে থাকে বলে দাবি তাদের। তবে বারবার বলেও প্রবীণদের জন্য রেলের ভাড়ায় ছাড় ফেরানো নিয়ে চটজলদি কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি রেল।
advertisement
আরও পড়ুন- সংঘর্ষে উত্তপ্ত উজবেকিস্তান ! ১৮ জনের মৃত্যু, আহতের সংখ্যা দু’শো ছাড়াল
বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি, পড়ুয়া ও রোগীদের মতো নির্দিষ্ট কয়েকটি ক্ষেত্রে ভাড়ায় ছাড় ছিল আগের মতোই। প্রবীণ নাগরিকদের রেলের টিকিটে ছাড় না দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন যাত্রীরা।রেলের নিয়ম অনুযায়ী, মহিলাদের ক্ষেত্রে ৫৮ বছর ও পুরুষদের ৬০ বছর বয়স হলে ভাড়ায় ছাড়া পাওয়া যায়। মহিলারা পান ৫০ শতাংশ ছাড়, পুরুষরা পান ৪০ শতাংশ ছাড় পান। রেল মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। বর্তমানে অধিকাংশের আর্থিক পরিস্থিতি খারাপ। রেলমন্ত্রক তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুক। তাতে তাঁদের সমস্যার কিছুটা সুরাহা হবে বলে মত। শেষ পর্যন্ত দেশজোড়া চাপের মুখে পড়ে চালু হচ্ছে রেলে প্রবীণদের জন্য ছাড়। প্রসঙ্গত, ভারতীয় রেলের সমস্ত ট্রেনে বয়স্ক নাগরিকদের করোনা মহামারির আগে রেলের ভাড়ায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হত। ৬০ বছরের বেশি বয়স্ক পুরুষ আর ৫৮ বছরের বেশি মহিলাদের রেলওয়ের বয়স্ক নাগরিক শ্রেণিতে রাখা হত। করোনা সময়ের আগে পর্যন্ত রাজধানী, শতাব্দী, দুরন্ত সমেত সমস্ত মেল এক্সপ্রেস ট্রেনে পুরুষদের বেস বেয়ারে ৪০ শতাংশ আর মহিলাদের বেস ফেয়ারে ৫০ শতাংশের ছাড় দেওয়া হত।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে দেশে করোনা সংক্রমণের হার অনেকটাই কমে গিয়েছে। ধীরে ধীরে সমস্ত কিছুই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। যে কারণে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের তরফে রেল চলাচলও শুরু করে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, করোনার আগে দেশে ৬০ বছরের বেশি বয়সের পুরুষ যাত্রী টিকিটের দামে ৪০ শতাংশ ছাড়া পেতেন। অন্যদিকে, ৫৮ বছরের বেশি বয়সের মহিলারা ছাড় পেতেন ৫০ শতাংশ। ওই ছাড় নিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় রেল ইতিমধ্যেই ছাড় দিয়ে টিকিটের দাম ধার্য করে। যে টিকিটে যাত্রীরা ৪৫ টাকা দেয়, সেখানে ১০০ টাকা দেয় রেল। সূত্রের খবর, টিকিটে ছাড় দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই রেলের ক্ষতি হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা। ওই টাকার ৮০ শতাংশ খরচ হয় প্রবীণ নাগরিকদের ছাড় দিতে গিয়ে। গত দু' বছরে যখন ওই ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছিল তখন রেলের ঘরে এসেছে ১৫০০ কোটি টাকা।