এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় এক মন্ত্রীকে ভোটে লড়িয়েছিল পদ্মশিবির। ধনপুর কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন কেন্দ্রীয়
সামাজিক ন্যায়বিচার এবং ক্ষমতায়ন মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক। সেই ধনপুর, যাকে চিরটাকাল ত্রিপুরার মানুষ লাল দুর্গ বলেই চিনে এসেছে। ১৯৭৭ সাল থেকে যে ধনপুর কখনও বামেদের হাতছাড়া হয়নি। যে কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। বামেদের সেই লাল দুর্গই এবার ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন গেরুয়া শিবিরের প্রতিমা। সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি ভোটে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করেছেন তিনি। এখন ত্রিপুরার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে উঠে আসছে এই প্রতিমা ভৌমিকেরই নাম।
advertisement
আরও পড়ুন: এত দিন ভুল জানতেন, কাগজ দিয়ে নয়! এই জিনিস দিয়ে তৈরি হয় টাকার নোট...
নির্বাচনী ফলাফল বেরনোর পরে প্রতিমার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বললেন Network 18 -এর প্রতিনিধি। সাক্ষাৎকারে উত্তরপূর্বের এই বিজেপি নেত্রী বললেন, দল তাঁকে যে দায়িত্ব দেবে, তা পালন করতে তিনি প্রস্তুত।
প্র: জেতার পরে কেমন লাগছে?
উ: আমি ধনপুরের মেয়ে। আমি দেখেছি, কমিউনিস্টরা কীভাবে এই ধনপুরকে অবহেলা করেছে। আমরা (বিজেপি) গত ৫ বছর ধরে কাজ করছি। মানুষ এখন বুঝতে পেরেছে 'ডাবল ইঞ্জিন সরকার' কেমন কাজ করে।
প্র. আপনি তো বিজেপির বহু পুরনো কর্মী। বিজেপির পৃষ্ঠা প্রমুখ (নিচুস্তরের কর্মী) হিসাবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন। আজ, এতদিন পরে, যখন সময়টা ফিরে দেখেন, তখন কেমন লাগে?
উ: বিষয়টা খুব একটা সহজ ছিল না। আমরা আমাদের দলের জন্য, এবং বৃহত্তর ক্ষেত্রে এ রাজ্যের মানুষের জন্য দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করেছি। অবশেষে, ত্রিপুরার মানুষ বুঝেছে। এই উন্নয়নের পিছনে পুরো কৃতিত্বই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। এবার তো বিরোধীরা সবরকমের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত উন্নয়নকে দেখেই ভোট দিয়েছেন মানুষ।
আমি ২০১৮ সালেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম। কিন্তু তখনও ধনপুর লাল দুর্গ ছিল। কিন্তু, এই বার মানুষ বুঝেছে। আমাদের উন্নয়নমূলক কাজের জন্যই আমাদের ভোট দিয়েছে।
এখন দল আমায় যা দায়িত্ব দেবে, আমি তা-ই পালন করব। আমরা মানুষের জন্য কাজ করব।
প্র. গতবারের তুলনায় তো বেশ কিছু আসন কমেছে। সেটা নিয়ে কী বলবেন?
উ: এই তো সবে ভোটের ফল বেরিয়েছে। আমরা অবশ্যই বিষয়টা নিয়ে দলীয় স্তরে পর্যালোচনা করব।
প্র. শোনা যাচ্ছে, আপনাকে নাকি দল মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য ভাবছে...
উ: দল আমায় অনেক কিছু দিয়েছে। সামান্য চাষির মেয়ে হয়ে আজ আমি কেন্দ্রের মন্ত্রী। 'মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়'। ওঁর জন্যই আজ এতদূর আসতে পেরেছি। দল যা বলবে, আমি তা করতে প্রস্তুত।
একে মহিলা রাজনীতিক। তার উপর জাতিতে 'নাথ'। জনজাতির প্রতিনিধি হয়েও ঝরঝরে বাংলা বলেন। রয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতাও। সাদামাটা চেহারার এই প্রতিমা অনায়াসেই হয়ে উঠতে পারেন বিজেপির বাঙালি মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর মুখ।
গত বৃহস্পতিবারই বেরিয়েছে নির্বাচনের ফলাফল। ৬০ আসনের ত্রিপুরা বিধানসভায় ৩৩টি আসনে জয়ী হয়েছে মোদি-শাহের পদ্মশিবির। আগামী ৮ মার্চই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর শপথ। তার আগে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছে মানিক-প্রতিমা দুই শিবিরের নেতারাই। তাঁদের এককথা। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তই শিরোধার্য।