ফাটল দেখা দেওয়ায় ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০০ বাড়ি খালি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যোশীমঠ প্রশাসন। গত শনিবার পরিস্থিতি বুঝে সেই তালিকায় যোগ করা হল আরও ৬৫টি পরিবার। ১১টি পরিবারের ঠাঁই হয়েছে অস্থায়ী শিবিরে। বর্তমানে, ফাটল বিপর্যয়ে ৬০৩টি বাড়ি খালি করেছে প্রশাসন।
আরও পড়ুন: একদিনে ২৫ জনের মৃত্যু! দেশের এই শহরে মৃত্যুঘণ্টা বাজাচ্ছে ঠান্ডা! সঙ্গীন অবস্থা কলকাতারও
advertisement
এখানেই শেষ নয়, স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের খবর, যোশীমঠের সাম্প্রতিকতম বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথও। উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার যোশীমঠ-মালারি বর্ডার রোড এই এলাকার সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করে চিনা বর্ডারের। সীমান্তগামী সেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথের একাধিক জায়গায় দেখা দিয়েছে ধস। ফলে, এই সড়কপথের বহু জায়গাতেই বড় বড় ফাটল তৈরি হয়েছে। সেটাও চিন্তায় রাখছে প্রশাসনকে।
গত শনিবারই বিশেষজ্ঞদের দল নিয়ে যোশীমঠের পরিস্থিতি পরিদর্শন করে গিয়েছিলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামি। তার পরে দেহরাদূনে মন্ত্রী, আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকও করেন তিনি। এবার আজ, রবিবার, ছুটির দিনও বিশেষজ্ঞ, আধিকারিকদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডেকেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতরও।
আরও পড়ুন: জাতীয় পুরস্কারজয়ী বক্সারের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক, মারাত্মক পরিণতি মহিলার! শোরগোল কলকাতায়
প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, রবিবার বিকেলে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন স্বরাষ্ট্র সচিব পি কে মিশ্রা। বৈঠকে অন্যান্য সচিব ছাড়াও উপস্থিত থাকছেন কেন্দ্রীয় সরকারের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকেরা। জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের প্রতিনিধিও থাকবেন এদিনের বৈঠকে। তাছাড়া, ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেবেন যোশীমঠের জেলা প্রশাসন এবং উত্তরাখণ্ডের অন্য পদস্থ আধিকারিকেরা।
সমস্যা অনেক দিনের। গত কয়েক বছর ধরেই উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার একাধিক জায়গায় মাটি বসে গিয়ে ফাটল দেখা দেওয়ার ঘটনা ঘটছিল। গত সপ্তাহে সেই সমস্যাই আরও বড় আকার ধারণ করেছে। তিল তিল করে মাটির নীচে বসে যাচ্ছে আস্ত একটা শহর। যোশীমঠ।
কেদার, বদ্রী-সহ চারধাম যাত্রার ক্ষেত্রে এই যোশীমঠ একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। সারাবছরই এখানে কমবেশি পুণ্যার্থীদের ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু, গত সপ্তাহের মধ্যে সড়ক, গৃহস্থ বাড়ি সহ বড় বড় হোটেলে দেখা দিতে শুরু করে বড়বড় ফাটল। গত শুক্রবার সন্ধেবেলা ধসে পড়ে একটি মন্দিরও।
বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এর পিছনে দায়ী জলবায়ু পরিবর্তনের মতো কারণ। এছাড়া, ক্রমাগত পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে সুড়ঙ্গ খোঁড়া, রাস্তা চওড়া করতে পাহাড়ে একের পর এক বিস্ফোরণ, একাধিক হাইড্রো ইলেক্ট্রিক পাওয়ার প্লান্ট তৈরি করা, এ সব কিছুই প্রভাব ফেলছে উত্তরাখণ্ডের প্রকৃতিতে। সভ্যতার চাপ নিতে পারছে না যোশীমঠ।