এদিন বৈঠক শেষে নীতীশ বলেন, ‘‘আজকের আলোচনা ভাল হয়েছে৷ সবাই সম্মতি দিয়েছে৷ খুব শীঘ্রই আবার সবাই বৈঠকে বসবে। মল্লিকার্জুন খাড়্গে পরবর্তী বৈঠক করবেন৷ কে, কোথায় কত আসনে লড়বে সেটা নিয়ে চূড়ান্ত হবে৷ এটাই আপাতত স্থির হয়েছে। বিজেপি যেভাবে সরকার চালাচ্ছে সবাই তার বিরোধিতা করেছে৷’’
আরও পড়ুন: ঝাঁপিয়ে বৃষ্টি, আবহাওয়ায় আমূল বদল! অবশেষে দক্ষিণবঙ্গের জন্য সুখবর শোনাল আলিপুর
advertisement
বিজেপি বিরোধী জোট গড়া নিয়ে চলতি বছরের গোড়ার দিক থেকেই রীতিমতো ময়দানে নেমে পড়েছেন নীতীশ কুমার৷ একে একে পৃথক বৈঠক সেরেছেন রাহুল, মমতা, কেজরির সঙ্গে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করতে নবান্নেও এসেছেন নীতীশ৷ সেই বৈঠকেই তাঁকে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি নিয়ে পটনায় একটি বৃহত্তর বৈঠকের আয়োজন করার পরামর্শ দেন মমতা৷ সেই পরামর্শ মেনে আজ, ২৩ জুনই আয়োজিত হয় এই মেগা বৈঠক৷
গত বৃহস্পতিবারই এই বৈঠকে যোগ দিতে পটনা পৌঁছে গিয়েছিলেন মমতা-অভিষেক৷ দেখা করেছিলেন লালুপ্রসাদ যাদবের সঙ্গেও৷ আজ, শুক্রবার সকালে বৈঠকে যোগ দিতে পটনা পৌঁছন রাহুল গান্ধি, মল্লিকার্জুন খাড়্গে এবং কে সি বেণুগোপাল৷ এদিন রাহুল-খাড়্গেকে স্বাগত জানাতে জয়প্রকাশ নারায়ণ বিমানবন্দরে হাজির ছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ স্বয়ং। বেলা ১১ টা থেকে দুপুর সাড়ে ৩টে পর্যন্ত বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল৷ তারপরে আধঘণ্টা যৌথ সাংবাদিক বৈঠক৷
আরও পড়ুন:বিজেপি বিরোধিতায় ‘আমরা এক’, একতা প্রতিষ্ঠায় নতুন উদ্যোগ নীতীশের
এদিনের বৈঠকে রাহুল-মমতা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অখিলেশ যাদব, লালুপ্রসাদ যাদব, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, উদ্ধব ঠাকরে৷ ছিলেন মেহবুবা মুফতি, ওমর আবদুল্লাও৷ অন্যদিকে, বামেদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন সীতারাম ইয়েচুরি, দীপঙ্কর ভট্টাচার্য৷
বৈঠক শেষে রাহুল গান্ধি বলেন, ‘‘দেশের প্রতিষ্ঠানের উপরে আক্রমণ করা হচ্ছে। আমাদের দেশের আদর্শের উপরে আঘাত হানা হচ্ছে। কোথাও কোথাও ছোট ছোট মতবিরোধ আছে৷ কিন্তু সবাই একসাথে লড়বে এই বিষয়ে আমরা সহমত পোষণ করেছি।’’
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে জানান, আগামী ১২ জুলাই শিমলায় বিরোধী দলগুলির পরবর্তী বৈঠক আয়োজিত হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা যৌথ ভাবে প্রতিটি রাজ্যের জন্য (বিজেপি-কে পরাজিত করতে) পৃথক রণকৌশল তৈরি করব৷ এই ইউনাইটেড ফ্রন্টে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত অঞ্চলের প্রতিনিধিরা রয়েছেন৷ আমরা সকলে একসাথে এই জোটকে আরও শক্তিশালী তৈরি করব৷’’
অন্যদিকে, বৈঠক শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও শোনা যায় ঐক্যের বার্তা৷ তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘একাধিক মুখ্যমন্ত্রী, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীও এসেছেন। শরদ পওয়ারের মতো নেতা এসেছেন। লালু প্রসাদ যাদবের মতো নেতা অনেক দিন পরে ময়দানে নেমেছে। সবাই এসেছেন। পটনায় আমি বৈঠক করতে বলেছিলাম, কারণ জন আন্দোলন এখান থেকে শুরু হয়। দিল্লিতে অনেক মিটিং করেছি, কিন্তু কোনও ফলপ্রসূ হয়নি। আমরা সবাই এক হয়ছি। এক সাথে আমরা লড়ব। ’’
এদিনের বৈঠককে মোটের উপরে সফলই বলছেন রাজনীতির কারবারিরা৷ কিন্তু, এর পরেই আসছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন৷ আসন সমঝোতা৷ কে কোথায় কতটা রফা করতে প্রস্তুত? স্বার্থত্যাগ করে বৃহত্তর ঐক্য তৈরিতে কতটা প্রস্তুত আঞ্চলিক দলগুলি? কতটা প্রস্তুত কংগ্রেস? সে প্রশ্নের উত্তর অবশ্য জুলাইয়ের আগে পাওয়া সম্ভব নয়৷