এবারের মণিপুরের বিধানসভা নির্বাচনেও বদলালো না ছবিটা৷
মণিপুরের মোট জনসংখ্যার ৫২ শতাংশই মহিলা৷ অথচ মণিপুরের নির্বাচনে ২৬৫ জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ১৭ মহিলা৷ যা মাত্র ৬.২৫ শতাংশ৷ ১৭ জনের মধ্যে চার জনকে টিকিট দিয়েছে কংগ্রেস, তিন জন করে মহিলা প্রার্থীদের টিকিট দিয়েছে বিজেপি এবং এনপিপি৷ এনসিপি এবং সিপিআই দু' জন করে মহিলা প্রার্কে নির্বাচনে প্রার্থী করেছে৷ জেডিইউ এবং স্থানীয় একটি দলের টিকিটে লড়ছেন একজন করে মহিলা প্রার্থী৷ নির্দল হিসেবে লড়ছেন দু' জন মহিলা৷
advertisement
কিন্তু উত্তর পূর্বের রাজনীতি থেকে বিমুখ কেন মহিলারা? সেই উত্তর জানতেই ইমা মার্কেটে গিয়েছিল নিউজ ১৮ বাংলা৷
ষোড়শ শতকে মণিপুরী পুরুষদের দূর দূরান্তে কাজে যেতে বাধ্য করা হত৷ যার ফলে মহিলারাই এই বাজার শুরু করতে একরকম বাধ্য হন৷ মণিপুরী ভাষায় ইমা শব্দের অর্থ মা৷ সকাল সাতটা থেকে শুরু করে সন্ধে পর্যন্ত গমগম করে ইম্ফলের ইমা মার্কেট৷
ইম্ফলের ইমা মার্কেটে এক মহিলা বিক্রেতা৷
গত কুড়ি বছর ধরে ইমা মার্কেটে ব্যবসা চালানো সুনীতা নামে এক বিক্রেতার কথায়, 'আমরা ভোর চারটের সময় উঠে বাড়ির সব কাজ সেরে এখানে এসে দোকান খুলি৷ আমরা জীবিকা অর্জনের জন্য এখানে আসি৷ রাজনীতি নিয়ে আমরা ভাবব কখন?'
আরও পড়ুন: এবার মণিপুরেও সরকার গড়বে এনপিপি, দাবি মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার
সুনীতার মতোই কমবেশি ইমা মার্কেটে আসা প্রায় সব মহিলারাই মনে করেন, পুরুষরা মহিলাদের থেকে রাজনীতি ভাল বোঝেন৷
ঝা শঙ্কর নামে আর এক মহিলা বলেন, 'ইমা বাজার আমাদের ঐতিহ্যের অংশ হয়ে উঠেছে৷ এখানে কঠিন পরিশ্রম করা একরকম আর রাজনীতি সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়৷ মহিলারা দুর্বল হয়৷ নির্বাচনের সময় তাঁরা কীভাবে চতুর্দিকে ছুটে বেড়াবেন?'
ইম্ফলের ইমা মার্কেট৷
তানিয়া নামে এক তরুণ সাংবাদিকের অবশ্য ব্যাখ্যা, 'রাজনীতিতে মহিলাদের অংশীদারিত্ব ধীরে ধীরে বাড়ছে৷ ২০১৬ সালের নির্বাচনে মণিপুরে মহিলা প্রার্থীদের সংখ্যা ছিল তিন শতাংশের কিছু বেশি৷ এবার তা বেড়ে ৬ শতাংশে পৌঁছেছে৷ আশা করি ভবিষ্যতে তা আরও বাড়বে৷'
আরও পড়ুন: কৃষকরা আমাদের সঙ্গেই আছেন, কৃষক আন্দোলন নিয়ে বললেন অমিত শাহ
বিজেপি-র মহিলা মোর্চার রাজ্য সভাপতি শারদা দেবী বলেন, 'রাজনীতি নিয়ে মহিলাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে৷ স্থানীয় স্তরে স্বশাসিত সংস্থাগুলিতে মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে৷ রাজ্যস্তরেও তা বাড়বে বলে আমি নিশ্চিত৷'
লতিকা নামে স্থানীয় এক বিজেপি নেত্রীর দাবি, তিনি প্রার্থী হতে চাইলেও তাঁকে টিকিট দেয়নি দল৷ যে কোনও কেন্দ্র থেকেই তিনি লড়তে রাজি বলে দাবি করেছেন লতিকা৷
মণিপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা ভক্তচরণ দাস বলেন, 'মহিলাদের প্রার্থী করার উপরে প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বিশেষ জোর দিয়েছেন৷ আমরা মহিলা প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির চেষ্টা করছি৷'
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং বলেন, 'আমরা তিনটি কেন্দ্রে মহিলাদের টিকিট দিয়েছি৷ এটা ধীরে ধীরে আরও বাড়বে৷ এবারে আমরা জয়ের সম্ভাবনা এবং আনুগত্যের উপরে জোর দিয়েই টিকিট বণ্টন করেছি৷'