এদিকে, সংসদের অন্দরে যখন এই ঘটনা ঘটছে, ঠিক সেই সময়ই বাইরে সংসদ ভবন চত্বরের পরিবহণ দফতরের বাইরে হলুদ ধোঁয়া উড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাতে দেখা যায় এক মহিলা ও এক তরুণকে৷ তাঁদেরও সেই সময় গ্রেফতার করে পুলিশ৷
এখন প্রশ্ন, হঠাৎ কেন কাণ্ড ঘটালেন এই চারজন৷ এর পিছনে কি কোনও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ ছিল? এঁরা কি কোনও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত? কেন ‘সংসদ হামলা’র দিনটাকেই বেছে নিয়েছিলেন এঁরা?
advertisement
সংসদের ভিতরে যে দু’জন ঢুকে পড়েছিলেন, তাঁদের একজনের নাম সাগর শর্মা এবং অন্যজন ৩৫ বছরের ডি মনোরঞ্জন৷ সংসদ ভবনের বাইরে যে মহিলা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তিনি বছর ৪২-এর নীলম এবং অপর তরুণের নাম অমল শিণ্ডে৷ তাঁর বয়স ২৫ বছর৷
পুলিশ জানিয়েছে, ‘সংসদ হামলা’র ২২তম বর্ষপূর্তির দিনে এই ঘটনা ঘটলেও, এদিনের ঘটনার সঙ্গে কোনও রকমের জঙ্গি কার্যকলাপের সম্পর্ক নেই৷ সংসদ ভবনের বাইরে থেকে ধৃত নীলম এবং অমলের কাছ থেকে এমন কোনও নথি পাওয়া যায়নি যাতে বোঝা যায় তাঁরা কোনও সন্ত্রাসবাদী, বা অন্য কোনও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত৷
উপরন্তু, সূত্রের খবর, এদিন ধৃত চারজনের মধ্যে একজন, হরিয়াণার নীলম সিং গ্রেফতারির পরে দাবি করেছেন, তাঁরা মূলত ‘বেকারত্বের’ বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ জানাতে চেয়েছিলেন বুধবার৷ শিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও, এতটা বয়স হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁরা এখনও বেকার, কেন দেশে কর্মহীন তরুণ-তরুণীর সংখ্যা এত বেড়ে যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই সমস্ত প্রশ্নের জবাব চাইতেই এদিন তাঁরা এই পথ বেছে নিয়েছিলেন৷ তাঁদের দাবি, এমন কিছু না ঘটানো ছাড়া, নিজের কথা কেন্দ্রীয় সরকারের কানে তোলার আর কোনও রাস্তা তাঁদের কাছে খোলা ছিল না৷
আবার আরেকটি সূত্রের দাবি, মণিপুরের ঘটনার প্রতিবাদ জানাতেই সংসদে এসেছিলেন ওই চারজন৷ তবে মূল কারণ, কী তা নিয়ে তদন্ত চলছে বলে সূত্রের খবর৷
শুধু বেকারত্বই নয়, সাধারণ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিও তাঁদের প্রতিবাদের অন্যতম কারণ ছিল বলে জানা গিয়েছে৷
সংসদ ভবনে ঢুকতে গেলে প্রয়োজন হয় বিশেষ পাস-এর৷ সেই পাস আবার ইস্যু করেন কোনও সাংসদ অথবা মন্ত্রী৷ যে কোনও রাজনৈতিক দলের কার্যালয় থেকেও অনেক সময় পাস ইস্যু করা হয়৷ এখন প্রশ্ন, বুধবার সংসদ ভবনে যে চারজন ঢুকে পড়ে হুলস্থূল কাণ্ড বাঁধিয়ে বসল, তাঁদের কাছে কি আদৌ সংসদ চত্বরে ঢোকার পাস ছিল? থাকলে সেগুলি তাঁরা কী করে পেলেন?
সূত্রের খবর, জানা গিয়েছে, অভিযুক্তেরা এদিনের পাস পেয়েছিলেন মাইসোরের বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিংহর কাছ থেকে৷ দু’বারের সাংসদ ৪২ বছরের প্রতাপ এর আগে পেশায় সাংবাদিক ছিলেন৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জীবনীও লিখেছেন তিনি৷
কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে বিভিন্ন স্তরে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ ওম বিড়লা৷ ঘটনার পরে একটি সর্বদলীয় বৈঠকও ডাকা হয় অধ্যক্ষের তরফে৷ গোটা সংসদ ভবন চত্বরে পুলিশ কুকুর নিয়ে চলে চিরুণি তল্লাশি৷