কচ্ছের মাধাপার হল এশিয়ার অন্যতম ধনী গ্রাম। এখানকার ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। অনেক পরিবারের যোগ রয়েছে বিদেশে।
নেতৃস্থানীয় জেলা ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের কাছ থেকে প্রাপ্ত বিবরণ অনুযায়ী, মাধাপার গ্রামে মোট ১২টি শাখা রয়েছে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের। এই সব শাখায় মোট ২,৬৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে।
এই গ্রামের বহু বাসিন্দাই এই মুহূর্তে বিদেশে বসবাস করেন। কিন্তু তাঁদের সঞ্চয় স্থানীয় ব্যাঙ্কে জমা হয়। মাধপারের সম্পদের কথা সবাই জানে।
advertisement
এখানে দারিদ্র্য নেই বলে মনে করা হলেও বাস্তবতা একটু ভিন্ন। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, মাধাপারের নবাবাস (নতুন এলাকা) এবং জুনাবাস (পুরাতন এলাকা)-এর মোট জনসংখ্যা ৩৮ হাজার, যা গ্রামের প্রধানদের মতে বর্তমানে প্রায় ৫০ হাজারে উন্নীত হয়েছে। এত বিশাল জনসংখ্যার একটি গ্রামে ৮,৪৫৬ জন দরিদ্র। ১,৭১১টি পরিবার দারিদ্র্যসীমার নিচে (বিপিএল তথ্য অনুযায়ী)। সরকারি তথ্য বলছে, মাধাপারের নাবাবাস এবং জুনাবাসে মোট ১,২২৪টি পরিবারের বিপিএল কার্ড রয়েছে। ৪৮৭টি পরিবার অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা থেকে উপকৃত হয়। এই ১,২২৪টি বিপিএল কার্ড থেকে ৬,৪৪৯ জন উপকৃত হন এবং অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা থেকে ২,০০৭ জন।
কেন এই বিরাট ফারাক?
প্যাটেল সম্প্রদায় এবং অনাবাসী ভারতীয় অধ্যুষিত নাবাবাসের প্রাক্তন প্রধান ও গ্রামের নেতা অর্জন ভুড়িয়া জানান, বেশিরভাগ দরিদ্র পরিবার বাইরে থেকে এসে মাধাপারে বসতি স্থাপন করেছে। মাধাপারে বংশ পরম্পরায় বসবাসকারী পরিবারগুলো বেশ ভাল অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যে থাকলেও রামনগরী, যোগীবাস ও সর্বোদয় ময়দানের পেছনের এলাকায় বসবাসকারী বেশিরভাগ অভিবাসী পরিবার অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল।
ভুড়িয়া দাবি করেন, দরিদ্র পরিবারের আবাসিক এলাকায় মৌলিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি তিনি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও তৈরি করেছেন।
অন্যদিকে, জুনাবাসের মহিলা প্রধানের স্বামী নারানভাই মহেশ্বরী বলেন, ‘নবাবাসের মতো জুনাবাসে কোনও একক সম্প্রদায়ের এত বেশি জনসংখ্যা নেই। এখানে নানা ধরনের মানুষের বাস। আমরা চাই, এই পরিবারগুলি আগে পানীয় জল এবং নিকাশির সুবিধাগুলি পাক। এর পাশাপাশি সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ যাতে সরকারের বিধবাভাতা, বৃদ্ধভাতা এবং আবাসন প্রকল্পের সুবিধা পান তাও দেখা হচ্ছে।’