ন্যাশনাল হাইওয়ে ৪৪-এর উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে এই রেস্তোরাঁটি। এটি শুধু খাবারের জন্যই বিখ্যাত নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে গোটা এলাকার পরিচয়। প্রত্যেক দিন পরোটার স্বাদ উপভোগ করতে এখানে প্রচুর মানুষ আসেন। শুধু পরোটাই নয়, এখানকার অন্যান্য খাবারের স্বাদও অতুলনীয়। শুধু দিনের বেলাতেই নয়, রাতের বেলাতেও এই রেস্তোরাঁয় উপচে পড়ে ভিড়।
advertisement
প্রতিদিন অতিথিদের আগমনের বহর দেখেই আন্দাজ করা যায় যে, প্রচুর রাজস্ব আয় করে এই রেস্তোরাঁ। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না যে, অমৃক সুখদেব রাস্তার ধারের একটি ছোট ধাবার আকারেই শুরু হয়েছিল। সম্প্রতি রকি সাগ্গু ক্যাপিটাল নামের এক ইনস্টাগ্রাম ক্রিয়েটর অমৃক সুখদেবের এই সফরের কাহিনি তুলে ধরেছিলেন।
ওই ক্রিয়েটর দাবি করেন যে, আজকের দিনে ওই রেস্তোরাঁটির বার্ষিক রাজস্ব ১০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। তিনি আরও জানান যে, অমৃক সুখদেব প্রতিদিন ৫০০০ থেকে ১০০০০ অতিথির মুখে খাবার তুলে দেয়। আর এই রেস্তোরাঁয় রয়েছেন প্রায় ৫০০ জন কর্মী। এই স্থানের ইতিহাস প্রসঙ্গে রকি জানান যে, ১৯৫৬ সালে মুরথালে একটি ছোট্ট ধাবা চালু করেন সর্দার প্রকাশ সিং। কোনওরকমে ছোট্ট একটি তাঁবুর মতো জায়গা থেকে সেই ধাবার সূত্রপাত। ডাল, রুটি, তরকারি এবং ভাতের মতো সাধারণ খাবার মিলত। হাইওয়ে দিয়ে চলাচলকারী ট্রাকগুলির চালকদের কথা ভেবেই রাখা হত খাবার। খোলা জায়গায় খাটিয়ার উপর বসে তাঁরা এখানকার খাবার উপভোগ করতেন।
১৯৯০ সালে এই ব্যবসায় যোগ দিয়েছিলেন সর্দার প্রকাশ সিংয়ের দুই পুত্র অমৃক এবং সুখদেব। বাবার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতেন তাঁরাও। সেই সঙ্গে রীতিমতো সুপরিকল্পিত ভাবে বাবার এই ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তাঁরা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আড়ে-বহরে লম্বা হতে থাকে এখানকার খাবারের তালিকাও। সমস্ত রকম গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে আজ শুধু উত্তর ভারতীয়ই নয়, দক্ষিণ ভারতীয় খাবারও পাওয়া যায় এখানে।
এই রেস্তোরাঁর সাফল্যের মূল দিকগুলি তুলে ধরেছেন রকি। তিনি জানান যে, প্রথম থেকেই গ্রাহকদের মধ্যে বিশ্বাস গড়ে তুলতে পেরেছে এই রেস্তোরাঁ। ট্রাকচালক এবং ক্যাবচালকদের বিনামূল্যে কিংবা কম দামে খাবার পরিবেশন করা হত। ফলে কেউ কেউ তো প্রতিদিনকার গ্রাহক হয়ে উঠেছিলেন। এই রেস্তোরাঁর সাফল্যের আরও একটি কারণ হল – এখানকার খাঁটি স্বাদ। এক্ষেত্রে কোনও রকম আপোস করেনি মালিকপক্ষ। খাবারের গুণমানের দিকেও থাকে তাদের কড়া নজর। অমৃক সুখদেব শুধু ভারতেরই কিংবদন্তি রেস্তোরাঁ নয়, বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এর খ্যাতি। চলতি বছর জানুয়ারি মাসে ‘100 Most Iconic Restaurants in the World’-এর TasteAtlas তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে এই রেস্তোরাঁটি।