মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরে সরকারে না থেকেও একনাথ শিন্ডেকে ব্যবহার করে শিবসেনায় চুপিসারে ভাঙন ধরিয়েছিল বিজেপি৷ সূত্রের খবর, উদ্ধবের পরিণতি ভবিষ্যতে তাঁরও হতে পারে, এই আশঙ্কা দানা বেঁধেছিল নীতীশের মনে৷ সেই কারণেই বিজেপি নির্ভরতা কমাতে চাইছিলেন নীতীশ৷ এর পিছনে একাধিক কারণও দেখছে রাজনৈতিক মহল৷
প্রথমত,গত বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যার নিরিখে বিজেপি-র থেকে অনেক পিছিয়ে ছিল নীতীশের জেডিইউ৷ এর জন্য বিজেপি-কেই দায়ী করতে শুরু করেছিলেন জেডিইউ নেতারা৷ কারণ, বিধানসভা নির্বাচনে আলাদা প্রার্থী দিয়ে জেডিইউ-এর ভোট কেটেছিলেন চিরাগ পাসোয়ান৷ এর পিছনে বিজেপি-র মদতই দেখেছিল জেডিইউ শিবির৷ বিধায়ক সংখ্যা কম থাকলেও প্রতিশ্রুিত অনুযায়ী নীতীশকেই মুখ্যমন্ত্রী করে বিজেপি৷ কিন্তু খাতায় কলমে মুখ্যমন্ত্রী হলেও কার্যত বিজেপি-র শর্তেই সরকার চালাতে হচ্ছিল নীতীশকে৷ যা তাঁর একেবারেই পছন্দ ছিল না৷
advertisement
আরও পড়ুন: আজই ইস্তফা দিতে পারেন নীতীশ, বিহারে জোর ধাক্কা খেল বিজেপি!
এখানেই শেষ নয়, শিবসেনার মতো জেডিইউ-এর অন্দরেও ভাঙন ধরানোর চেষ্টা চলছে, এমন আঁচও পেয়েছিলেন নীতীশ৷ এক্ষেত্রে তাঁর সরাসরি অভিযোগ ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিকে৷ জেডিইউ শিবিরের দাবি, তাদের দলের নেতা আরসিপি সিং-কে ব্যবহার করে বিহার চিরাগ মডেলের দ্বিতীয় সংস্করণ শুরু করতে চাইছিলেন বিজেপি নেতারা৷
২০১৯ সালে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন নীতীশ৷ কিন্তু কার্যত দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে গত বছর মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের সময় মোদি ক্যাবিনেটে জায়গা পান জেডিইউ-এর আরসিপি সিং৷ এই সিদ্ধান্তে নীতিশের অনুমোদন ছিল না৷
আরসিপি সিং-এর ডানা ছাঁটতে তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ পদে নতুন করে মনোনয়ন দেননি নীতীশ৷ বাধ্য হয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেন তিনি৷ কয়েকদিন আগেই দুর্নীতির অভিযোগে আরসিপি সিং-এর জবাবদিহি তলব করে জেডিইউ৷ এর পরেই জেডিইউ ছাড়েন আরসিপি সিং৷
গত মাস থেকে চার বার বিজেপি শিবিরের আমন্ত্রণ উপেক্ষা করেন নীতীশ কুমার৷ দূরত্ব বাড়াতে থাকেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহদের সঙ্গে৷ বলা ভাল, মহারাষ্ট্রের পর্বের পরই বিজেপি-তে বিশ্বাসভঙ্গ হয় নীতীশের৷ দেরি না করেই তাই পুরনো সঙ্গী লালু প্রসাদের পুত্র তেজস্বীর হাতই ধরলেন তিনি৷