বান্দ্রা কুরলা কমপ্লেক্সের জিও ওয়ার্ল্ড গার্ডেনে এই সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি তৈরি করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন নীতা আম্বানি এবং তাঁর কন্যা ইশা আম্বানি। অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্য রেখেছিলেন নীতা আম্বানি। তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে ভারতীয় সভ্যতা-সংস্কৃতির কথা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল অতিথিকে অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাতেও ভোলেননি মুকেশ-পত্নী। এখানেই শেষ নয়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে নৃত্যশিল্পী হিসেবেও অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি।
advertisement
নীতা আম্বানি বলেন, “আমাদের সংস্কৃতি হাজার হাজার বছর ধরে শুধু টিকেই নেই, বরং ফুলেফেঁপে উঠেছে। আর এটা প্রাচীন সভ্যতাগুলির মধ্যে অন্যতম, যা বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ। মুকেশ আর আমার জন্য, এটা একটি স্বপ্ন পূরণের মতো। আসলে বহু দিন ধরে আমরা একটা স্বপ্ন লালন করেছিলাম যে, ভারতে যেন একটি বিশ্বমানের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হয়।”
আরও পড়ুন- NMACC-র আর্ট হাউস ‘সঙ্গম’ (Confluence) উদ্বোধন করলেন কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি
তিনি আরও যোগ করেন, “আমাদের বোধ, সহনশীলতা এবং সম্মানকে এক সুতোয় গেঁথে ফেলে সংস্কৃতি। যা সম্প্রদায় এবং দেশগুলিকে একে অপরের সঙ্গে জুড়ে রাখে। সংস্কৃতি মানবতার জন্যও আশা ও সুখ নিয়ে আসে। একজন শিল্পী হিসেবে আমি আশা করি, এই কেন্দ্রটি শিল্প, শিল্পী ও শ্রোতাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে প্রমাণিত হবে। আমাদের আশা, এই কেন্দ্রটি শুধুমাত্র বড় শহরের নয়, দেশের ছোট শহর, শহরতলি এবং প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আগত সেরা প্রতিভার আবাসস্থল হবে। আমাদের কাছে যতক্ষণ একটি প্ল্যাটফর্ম আর কণ্ঠস্বর আছে, ততক্ষণ মনের কথা বলার এবং বিশ্বকে পরিবর্তন করার ক্ষমতা রয়েছে। আমরা চাই, এটি এমন একটি কেন্দ্রে পরিণত হোক, যা শিল্প, সংস্কৃতি এবং জ্ঞানের ত্রিবেণী সঙ্গম হয়ে উঠবে।”
রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন বলেন, '”আজ আমি এই গ্র্যান্ড থিয়েটার মঞ্চে নিজের নৃত্যশৈলী প্রদর্শন করলাম। ফলে আমি যারপরনাই খুবই উচ্ছ্বসিত। কয়েক দশক ধরে মঞ্চ থেকে দূরে থাকার পরেও আজও আমি সেই একই শক্তি অনুভব করি, যা আমি আমার ৬ বছর বয়সে অনুভব করতাম। কলেজে পড়াকালীন ফিরোজ নামের এক তরুণ প্রতিভাবান অভিনেতার সঙ্গে আমি প্রথম নাটক করেছিলাম। কথায় বলে না, জীবন একটি পূর্ণ বৃত্ত আসে! সেই বন্ধু ফিরোজকে নাট্যশালার প্রথম পরিচালক হিসেবে আজ এখানে পেয়ে আমি ভীষণই খুশি।”
এই সব কিছুর জন্য নিজের পরিবারকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি আম্বানি পরিবারের বড় বধূ। অনুষ্ঠানের মঞ্চে স্মরণ করেন নিজের শ্বশুরমশাই ধীরুভাই আম্বানিকে। তাঁর সম্পর্কে নীতা বলেন, “উনি নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাস রাখতেন। এমনকী আমায় বড় চিন্তাভাবনা করতেও উদ্বুদ্ধ করতেন।” আবার নিজের মা-বাবা এবং শাশুড়ির প্রসন্দ্রঙ্গেও কথা বলেছেন নীতা। জানান, “আমার বাবা শ্রী রবীন্দ্রভাইয়ের সজ্জনতা এবং মমত্ববোধ আমায় পথ দেখায়। আমি আমার মা-কেও ধন্যবাদ জানাতে চাই, যিনি আজ এখানে উপস্থিত রয়েছেন। শুধু মা-ই নয়, অনুষ্ঠানে উপস্থিত আমার শাশুড়ি মা-ও আমার ধারবাহিকতার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।”
এখানেই থামেননি নীতা। বলেন, “আমার শক্তি হল আমার ছয় সন্তান - ইশা, আনন্দ, আকাশ, শ্লোকা, অনন্ত এবং রাধিকা। তিন নাতি-নাতনি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দ। সব শেষে আমি আমার স্বামী মুকেশকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। যিনি আমার প্রতিটি স্বপ্নে বিশ্বাস রেখেছেন এবং যাঁকে ছাড়া কিছুই সম্ভব হত না। জীবনের এই সফর এত সুন্দর করে তোলার জন্যও তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।”