‘২৪ এর লোকসভা ভোটে দিল্লির মসনদে ফিরতে দেশজুড়ে ১ মাস ব্যাপী সভা করার কর্মসূচি নিয়েছেন মোদি। জাতীয় এই কর্মসূচির নাম ‘মহাজনসম্পর্ক অভিযান’। ১ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি। রাজনৈতিক মহলের মতে, সংসদে বাদল অধিবেশনের আগে দেশব্যাপী এই কমসূচির মধ্য দিয়ে কেন্দ্র সরকারের বিগত ৯ বছরে তার সরকারের সাফল্যের খতিয়ান পেশ করাই মোদির লক্ষ্য।
advertisement
আরও পড়ুন: পুলিশের নিরাপত্তা নিয়ে ফের শুভেন্দুর নিশানায় অভিষেক, নথি তুলে ধরে ট্যুইট
‘২৪ এর লোকসভা ভোটে সম্ভবত শেষবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মোদিকে সামনে রেখে দিল্লি দখলের লড়াইয়ে নামতে চলেছে বিজেপি। সে কারণে, লোকসভা ভোটের মূল প্রচার শুরুর আগে মোদির জনমোহিনী ক্ষমতা কতটা অটুট তা একবার পরখ করে দেখে নিতে চাইছেন মোদি ও তাঁর দল।
তবে, মোদি, শাহ ও নাড্ডার এই মেগা-শোই শেষ নয়। ১ জুন থেকে শুরু হওয়া এই মহা জনসম্পর্ক অভিযানের মধ্যেই প্রদেশ স্তরে ২০ থেকে ৩০ জুন গৃহ সম্পর্ক অভিযানে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বিষয়ে সচেতন করবে বিজেপি। মোদির সাফল্য আর মমতার ব্যর্থতা এটাই প্রচারের মূল অভিমুখ। বলছেন, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
তিন মাস ব্যাপী বিজেপির জনসম্পর্ক কর্মসূচি:
এরই সঙ্গে জুন মাসে রাজ্যের ১৩০৯ টি মণ্ডলের মধ্যে ১ হাজারটি মণ্ডল সভা করবে বিজেপি। ২৯৪ টি বিধানসভার ৩০০ মণ্ডলে সভা করবেন শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার ও দিলীপ ঘোষ। প্রত্যেকে কমবেশি ১০০ টি করে সভা করবেন। আগামী তিন মাস ধরে মণ্ডল স্তরে বাকি ৭০০ সভায় রাজ্যের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক ও রাজ্য এবং জেলা নেতৃত্ব অংশ নেবেন। জনসম্পর্ক অভিযানে রাজ্যের বিশিষ্ঠ ব্যক্তিদের বাড়ি গিয়ে, মোদি সরকারের ৯ বছরের সাফল্যের খতিয়ান আনুষ্ঠানিক ভাবে তাদের হাতে তুলে দিয়ে তাদের মতামত চাইবেন কেন্দ্র ও রাজ্যের শীর্ষ নেতারা।
রাজ্য বিজেপির এক নেতার কথায়, এক কথায় মোদি, শাহ, নড্ডার সভা আর আগামী তিন মাস ধরে প্রস্তাবিত জনসম্পর্ক অভিযান কর্মসূচির জেরে নাভিশ্বাস উঠতে চলেছে রাজ্য বিজেপির। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কর্মসূচি ঘোষণা করে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আগামী ১ মাস দল কেন্দ্রের নির্দেশিত কর্মসূচিই পালন করবে। বাকি সব কর্মসূচি আপাতত বন্ধ রাখতে হবে।
সুকান্তর এই ঘোষণায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে দলের নিচুতলার কর্মীরা। সূত্রের খবর, জেলায়, জেলায় সংগঠনের সব স্তরে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের এই নির্দেশিকা নিয়ে নানা সমালোচনা শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গের এক রাজ্য নেতা বলেন, ‘‘কেন্দ্রের নির্দেশ পালন তো করতেই হবে। এটাই আমাদের দলের শৃঙ্খলা। কিন্তু, জুনের প্রথম সপ্তাহে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হয়ে গেলে, তার মধ্যে এই জনসম্পর্ক অভিযান কীভাবে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হবে তা নিয়ে আমরা চিন্তিত।’’
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রাম নিয়ে বড় ঘোষণা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের! বৃহস্পতিবার নবজোয়ারে ‘মেগা ডে’
যদিও, ওই নেতার এই উদ্বেগকে কোনও গুরুত্বই দিতে চায় না রাজ্য। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। এই জনসম্পর্ক অভিযানের লক্ষ্যই মানুষের কাছে পৌঁছনো। পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হলে দলের কথা মানুষের কাছে এই কর্মসূচির মধ্য দিয়েই পৌঁছে দেব আমরা।’’
তবে, রাজনৈতিক মহলের মতে, সাধারণভাবে লোকসভা ভোটের সময় আগামী বছর এপ্রিল-মে মাসে। সেক্ষেত্রে, সেই নির্বাচনের ঢাক আগাম প্রায় ১ বছর আগে বাজানো শুরু করলে শেষ পর্যন্ত তার রেশ ধরে রাখা যে কোনও দলের কাছেই একটা মস্ত চ্যালেঞ্জ। আর, রাজ্য বিজেপির মত দলের কাছে তো বটেই।