পুলিশ জানতে পেরেছে, ৪ মার্চ তারিখ খুন হলেও সৌরভের ফোন থেকে ৬ মার্চ হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ পান তাঁর বোন চিঙ্কি৷ তার উত্তরও দেন তিনি৷ তখনও তিনি জানতেন না, তাঁর দাদাকে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে একটি ড্রামে ভরে রাখা হয়েছে৷ ৮ তারিখ ফের দাদাকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ করেন চিঙ্কি৷ তার জবাবও আসে৷ আসলে সৌরভ জীবিত আছেন তা বোঝাতে তাঁর স্ত্রী মুসকানই স্বামীর ফোন থেকে তাঁর পরিচিতদের সঙ্গে কথোপকথন চালাচ্ছিল৷
advertisement
আরও পড়ুন: কোলের উপরে বস্তায় স্বামীর দেহ, প্রেমিকের বাইকে চেপে ফেলতে গেলেন স্ত্রী! মিরাটের পর এবার জয়পুর
৬ তারিখ সৌরভর নম্বর থেকে আসা মেসেজে চিঙ্কিকে জিজ্ঞেস করা হয় যে তিনি হোলিতে বাড়িতে আসবেন কি না৷ জবাবে চিঙ্কি জানান তিনি বাড়ি আসবেন৷ তখনই সৌরভের নম্বর থেকে জবাব আসে, কয়েকদিনের জন্য তিনি মানালিতে বেড়াতে গিয়েছেন৷ ফলে হোলির অনুষ্ঠানে বাড়ি আসতে পারবে না৷ দাদা নিজেই এ কথা বলছেন ভেবে বিশ্বাস করে নেন চিঙ্কি৷ ৮ তারিখ দাদাকে ফের মেসেজ করে চিঙ্কি জানতে চায়, কেন মেয়েকমানালি নিয়ে গেল না সে? এবার জবাব আসে, ‘এখানে খুব ঠান্ডা, বাইরে -১০ ডিগ্রি সেসলিয়াস তাপমাত্রা৷ মেয়েকে আনলে ওর ঠান্ডা লেগে যেত৷’
তবে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজের জবাব দিলেও ফোন ধরছিলেন না সৌরভ৷ এতেই পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা বিষয়টি পুলিশকে জানান৷ তদন্তে নেমে সৌরভের স্ত্রী এবং তার প্রেমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ৷
এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে প্রেম করে বিয়ে হয় সৌরভ ও মুসকানের৷ দু বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন মিরাটের ইন্দিরানগর এলাকায়৷ ২০১৯ সালে একটি কন্যাসন্তান হয় তাঁদের৷ এর পরই নিজের বন্ধু সাহিলের সঙ্গে স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্কের কথা জানতে পারেন সৌরভ৷ শুরু হয় অশান্তি৷ একটা সময়ের পর আলাদা থাকতে শুরু করেন তাঁরা৷ ২০২৩ সালে ফের মার্চেন্ট নেভির কাজে যোগ দেন সৌরভ৷ মেয়ের জন্মদিন উদযাপন করতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি লন্ডন থেকে মিরাটে ফেরেন তিনি৷
ইন্দিরা নগরের ভাড়া বাড়িতেই স্ত্রী এবং মেয়ের সঙ্গে থাকছিলেন সৌরভ৷ প্রথম কয়েকদিন মেয়েকে স্কুলেও দিতে যান তিনি৷ আচমকা ৪ তারিখের পর সৌরভ উধাও হয়ে যাওয়ায় খোঁজ খবর শুরু করেন তাঁর পরিবারের সদস্য এবং পাড়া প্রতিবেশীরা৷ তখন সৌরভের স্ত্রী মুসকান সবাইকে বলে, সে মানালিতে বেড়াতে গিয়েছে৷ এর পর নিজেই প্রেমিক সাহিলকে নিয়ে মানালি চলে যায় মুসকান৷
সৌরভের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে মানালির ছবিও পোস্ট করে সে৷ সৌরভ যে বেঁচে আছে, সেটা প্রমাণ করেই তাঁর পরিবারকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিল মুসকান৷ যদিও তার সেই চেষ্টা সফল হয়নি৷ মুসকানের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন তার বাবা-মাও৷