গ্রামীণ থেকে পাহাড়ি এলাকা, ত্রিপুরার সাধারণ মানুষের অন্যতম বড় সমস্যা ছিল পানীয় জলের সঙ্কট। বছরের বিভিন্ন সময় এবং বিশেষ করে সুখা মরসুম এলে রাজ্যের গ্রামীণ এবং পাহাড়ি এলাকাগুলিতে তীব্র জল সঙ্কট দেখা দিত। জনজাতি এলাকার মানুষকে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে ছরা, ছোট নদী ও অপেক্ষাকৃত নিচু জায়গায় ছোট ছোট গর্ত করে জল সংগ্রহ করতে হত। এই উৎসের জল বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছিল পানের অযোগ্য এবং দূষিত। এইসব উৎস থেকে জল পান করে জলবাহিত রোগে আক্রান্তও হতে হত।
advertisement
আরও পড়ুন: ৮০ বছর পর জার্মান ট্যাঙ্কের নিশানায় রাশিয়া! গুনে গুনে শেষ করার হুমকি দিলেন পুতিন
মানিক সাহার সরকারের দাবি, ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সাধারণ মানুষের জলকষ্ট মেটাতে বিশেষ উদ্যোগী হয় বিজেপি। জল জীবন মিশনের মাধ্যমে রাজ্যের প্রতিটি ঘরে বিনামূল্যে পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বর্তমান বিজেপি সরকার গ্রামীণ এলাকার ৩,৭৪,৬১৪টি পরিবারে পরিস্রুত পানীয় জলের সুবন্দোবস্ত করে দিয়েছে৷ ইতিমধ্যেই ৩৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজ কাউন্সিলে ১০০ শতাংশ বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে গিয়েছে।
রাজ্যের ১,৩৯৯টি জনপদ সম্পূর্ণ ভাবে ১০০ শতাংশ পানীয় জল সরবরাহের আওতায় এসেছে। রাজ্যের ১,১৭৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নতুন করে গ্রামীণ জল ও স্বাস্থ্য বিধান কমিটি গঠন করা হয়েছে যাতে প্রতিটি বাড়িতে পানীয় জলের সুবন্দোবস্ত করা যায়। এই কমিটির সদস্যেরা স্থানীয় এলাকার কাজকর্মের তদারকি করবেন যাতে গুণগত মান বজায় রেখে কাজ সম্পন্ন করা হয়।
রাজ্যে আরও পানীয় জলের উৎস তৈরি করার জন্য নতুন করে ১,৬৯০টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হচ্ছে বলে জানাচ্ছে ত্রিপুরা সরকার। সেই সঙ্গে ভূগর্ভস্থ জল সরবরাহকারী ৬৯টি উৎস তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ৬৪৩টি গভীর নলকূপ প্রকল্প ইতিমধ্যেই চালু করা হয়েছে এবং ৭৫৪টি ভূগর্ভস্থ পানীয় জল সরবরাহকারী পাম্প চালু হয়েছে।
আরও পড়ুন- ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে আজ একগুচ্ছ কর্মসূচি অমিত শাহের
পরিস্রুত পানীয় জলের জন্য শুধুমাত্র বড় বড় উৎসই তৈরি করা হচ্ছে না অসংখ্য ছোট ছোট উৎস তৈরি করা হচ্ছে যাতে করে ছোট ছোট জনপদ গুলিকেও পানীয় জল সরবরাহ করা যায়। এর প্রেক্ষিতে সারা রাজ্যে ইতিমধ্যে ২৬৫৫টি ছোট বোর নলকূপ চালু করা হয়েছে এবং এমন আরও ২১৫৪টি দ্রুত চালু হবে।
ত্রিপুরার বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে ৬১টি উদ্ভাবনী জল সরবরাহ প্রকল্প চালু করা হয়েছে এবং এমন আরও ২০১টি প্রকল্প খুব দ্রুত চালু হবে। ভূগর্ভস্থ জলের উৎস তৈরির পাশাপাশি ভূপৃষ্ঠেও জলের উৎস অর্থাৎ সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট চালু করা হয়েছে, ইতিমধ্যে এমন ৩টি চালু হয়ে গিয়েছে এবং আরও পাঁচটি উৎস তৈরির কাজ চলছে। ২,০৮৪টি পরিবারে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পরিস্রুত পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের বাড়ি ঘরেই পরিস্রুত পানীয় জলের বন্দোবস্ত করেই বসে থাকছে না সরকার। ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিস্রুত পানীয় জল পায় তার জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ৪,৯৫৮টি স্কুল এবং অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে পরিস্রুত পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।