নিজের পরিবারকে নিয়ে পিন্টু থাকেন নৈনির আরাইল এলাকায়। আসলে পিন্টুর পরিবার বিশাল বড়। রয়েছেন প্রায় ১০০ জন সদস্য। বিগত কয়েক মাস ধরে সকলে মিলে মহাকুম্ভের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁরা। বিল্ডিং এবং ১৩০টি নৌকার জন্য বিনিয়োগ করেছিলেন তাঁরা। যাতে পুণ্যার্থীদের জলপথে পারাপার করানো যেতে পারে।
advertisement
এই ব্যবসা করার জন্য পিন্টু নিজের মায়ের গয়না পর্যন্ত বন্ধক দিয়েছিল। প্রথমে টাকা খোওয়ানোর আশঙ্কা করেছিলেন তাঁর মা। কিন্তু মহাকুম্ভ যত এগোতে থাকে, দেখা যায়, প্রচুর অর্থ হাতে আসতে শুরু করেছে। ভয়-আতঙ্ক পরিণত হয় আনন্দে। এদিকে তাঁদের সকলের কঠোর পরিশ্রম এবং সাফল্যের স্বীকৃতি দিয়েছেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেটার জন্যও উচ্ছ্বসিত তাঁরা।
পিন্টুর বক্তব্য, ৪৫ দিন ব্যাপী মহাকুম্ভে ১৩০টি নৌকা পারপার করিয়ে তাঁর পরিবার ৩০ কোটি টাকা আয় করেছে। অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্পষ্ট করে দেন যে, তাঁরা শুধুমাত্র সরকার নির্ধারিত ভাড়া অনুসরণ করেছেন। পুণ্যার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়নি। এমনকী, কিছু পুণ্যার্থী তো অনুদান হিসেবে অতিরিক্ত টাকা দিয়েছেন তাঁদের।
এক-একটি নৌকা তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু উৎসবের সময় এক-একটি নৌকা দৈনিক ৫০ হাজার টাকা আয় করেছিল। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এক-একটি নৌকা আয় করেছে ২৩ লক্ষ টাকা। সব মিলিয়ে ১৩০টি নৌকা থেকে তাঁদের আয় হয়েছে ৩০ কোটি টাকা।
মহাকুম্ভ মেলার সময় নৌকার অফিসিয়াল ভাড়া ছিল জনপ্রতি ৪৮৩ টাকা। যদিও একাধিক প্রতিবেদনে দাবি যে, যাত্রীদের থেকে প্রতি রাইডের জন্য ২০০০ থেকে ৪০০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। একটি ১০টি আসনবিশিষ্ট নৌকায় যদি প্রতি যাত্রীর থেকে ১৫০০ টাকা নেওয়া হয়, তাহলে এক-একটি ট্রিপে আয় হবে ১৫ হাজার টাকা।
পিন্টু মাল্লাহ জানান যে, এই সময় অক্লান্ত ভাবে কাজ করে গিয়েছেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “যোগীজি এবং মোদিজিকে ধন্যবাদ। এই দুর্দান্ত অনুষ্ঠানকে সম্ভব করার জন্য। আর আমাদের মতো নৌকাচালকদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। জীবনে এত পরিমাণ টাকা একসঙ্গে কখনওই দেখিনি।”
পিন্টুর পরিবারেই রয়েছে ৭০টি নৌকা। এমনকী, ওই এলাকার একাধিক পরিবারের রয়েছে ১০-২০টি করে নৌকা। ফলে তাঁদের গ্রামের প্রায় প্রতিটি পরিবার রোজগারের মুখ দেখেছে। এমনকী, তা নাটকীয় ভাবে অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতেও এনেছে বদল। পিন্টুর কথায়, “আমরা কখনওই ভাবিনি যে, এতটা আয় হবে। আর মহাকুম্ভ আমাদের জীবন বদলে দিয়েছে।”