মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে ভোপালের একটি অভিজাত আবাসনে৷ এনডিটিভি-তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, মৃত ওই ব্যক্তির নাম ঋষিরাজ ভাটনাগর৷ গত সোমবার রাত দশটা নাগাদ আবাসনের লিফটে চড়েই উপরে নিজেদের ফ্ল্যাটে আসার চেষ্টা করে ঋষিরাজের ৮ বছর বয়সি পুত্র দেবাংশ৷
সেই সময় বাইরে ঝোড়ো হাওয়া বইছিল৷ ৮ বছর বয়সি দেবাংশ লিফটে ওঠার পরই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়৷ আতঙ্কিত হয়ে শিশুটি প্রাণপণে নিজের বাবাকে ডাকতে থাকে৷
advertisement
আরও পড়ুন: পা জড়িয়ে ধরেন বোন রেহানা, শেষ পর্যন্ত কার কথায় ক্ষমতা ছাড়তে রাজি হন হাসিনা? এতদিনে ফাঁস
বন্ধ লিফটের দরজার ফাঁক গলেই আতঙ্কিত ছেলের আর্তনাদ পৌঁছয় বাবার কানে৷ ছেলেকে উদ্ধার করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন ঋষিরাজ৷ সিঁড়ি দিয়ে বার বার ওঠানামা করতে থাকেন তিনি৷ দ্রুত ছুটে যান জেনারেটর রুমে৷ কোনও ভাবে লিফট চালু করে ছেলেকে বের করে আনার জন্য যা যা করা সম্ভব, করে ফেলেন উদ্বিগ্ন ওই ব্যক্তি৷
আর তা করতে গিয়েই ঘটে যায় বিপত্তি৷ মিনিট তিনেকের মধ্যে জেনারেটর চালু হয়ে লিফটের বিদ্যুৎ সংযোগ শুরু করে৷ চালু হয় লিফট৷ দরজা খুলে নিরাপদেই বেরিয়ে আসে ৮ বছর বয়সি দেবাংশ৷ কিন্তু ততক্ষণে সংজ্ঞাহীন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন তাঁর বাবা৷
লিফটে আটকে থাকা ছেলের জন্য উদ্বেগ, বার বার সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার ধকল আর নিতে পারেনি তাঁর শরীর৷ হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি৷ প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে সাহায্যের চেষ্টা করেন ঋষিরাজকে৷ দেওয়া হয় সিপিআর৷ সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে৷ কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি৷ ওই ব্যক্তিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা৷
ঘটনাচক্রে মাত্র তিন মাস আগে ঋষিরাজের বাবাও বিকেলে চা খেতে খেতে একই ভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান৷
প্রাথমিক ভাবে ওই আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দা এবং পুলিশ জানতে পেরেছে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর জেনারেটর সঙ্গে সঙ্গে চালু হয়নি৷ যে কারণেই আতঙ্ক গ্রাস করে লিফটের ভিতরে থাকা শিশুটিকে৷ পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, কেন এই বিভ্রাট ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
ওই আবাসনের রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে আবাসিকদের সবধরনের সুবিধার দিকে খেয়াল রাখতেন ঋষিরাজ৷ আবাসন সংক্রান্ত কোনও সমস্যায় কোনও আবাসিক পড়লে, সবার আগে তিনিই ছুটে যেতেন৷ আবাসনের লিফট, জেনারেটরের কীভাবে চলে সেসব কিছুও ছিল তাঁর নখদর্পণে৷ কিন্তু আতঙ্কিত ছেলের আর্তনাদে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন ঋষিরাজ৷ আর তার পরিণতি হল মর্মান্তিক৷