জৌনপুরের বাসিন্দা মডেল একতা তিওয়ারির দাবি, তিনি অজান্তেই দুই সন্দেহভাজন জঙ্গির সংস্পর্শে এসেছিলেন ঘটনার আগেই। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি যাদের স্কেচ প্রকাশ করেছিল, তারা খচ্চর হ্যান্ডলার হিসাবে কাজ করছিল। পারিবার নিয়ে কাশ্মীর ভ্রমণের সময় সেই দলের সঙ্গে ছিলেন তাঁরা। হামলার ঠিক দু’দিন আগেই বাড়ি ফেরেন একতা।
নিউজ 18 হিন্দির সঙ্গে কথা বলার সময় একতা তিওয়ারি বলেন, বেড়ানোর সময় দুই খচ্চর হ্যান্ডলারের আচরণ নিয়ে অস্বস্তি বোধ করেছিলেন তিনি, সন্দেহ হওয়ায় তিনি গোপনে তাদের ভিডিও রেকর্ড করেন। ২১ এপ্রিল পহেলগাঁও থেকে ফিরি। ঠিক পরের দিনই দুপুরে মর্মান্তিক এই হামলা হয়। এখন কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত স্কেচগুলো দেখার পর বুঝতে পারছি, মৃত্যুর সঙ্গে আমারও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়েছিল।
advertisement
খচ্চর চড়ার জন্য স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। কিন্তু যখন বুকিং স্পটে পৌঁছে সেখানে অন্য দু’জন অচেনা মুখ দেখায়, তাঁরা তাদের সঙ্গে যেতে অস্বীকার করেন। একতা বলেন, “খচ্চরের সঙ্গে দু’জন অপরিচিত লোক ছিল। তারা আমাকে আজমীরের কথা জিজ্ঞেস করছিল। আমি জানাই, কখনও সেখানে যাইনি। তারপর তারা আমাকে অমরনাথ যাত্রা সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করে। অন্য একজন আমাদের ধর্ম নিয়েও প্রশ্ন করে। আমি ভয় পেয়ে যাওয়ায় সেই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাই। আমার স্বামী, বিয়ে নিয়েও ব্যক্তিগত প্রশ্ন করছিল।” একতার দাবি, অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবকের মধ্যে এদকজন নিজেকে কোরানের শিক্ষক বলে দাবি করেন।
১৩ এপ্রিল বৈষ্ণোদেবী দর্শনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেছিলেন একতা, সেখান থেকে সোনমার্গ এবং শ্রীনগরে ঘুরে ২০ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পৌঁছন। একতার দাবি, খচ্চরে যাওয়ার যে লাইন ছিল, সেখানে অন্যান্যদের মতো তাঁর পরিবারকেও ওই অজ্ঞাতপরিচয় যুবকরা তাদের সঙ্গে বৈসরন যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু তাঁরা না যাওয়ায় ওরা রেগে যায় এমনকি আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। সেই ঘটনারও ভিডিও করেছিলাম সেদিন। সেই ভিডিওয় থাকা একজনের মুখ সন্ত্রাসবাদী একজনের মুখের সঙ্গে হুবহু এক। তাঁর দাবি, “খচ্চর হ্যান্ডলারদের মধ্যে একজনের জুতোর ভিতরে একটি কীপ্যাড ফোনও লুকানো ছিল। সেখান থেকে নানারকম কথা বলছিল তারা। এমনকি ‘প্ল্যান এ’ এবং ‘প্ল্যান বি’, কোনটা কী ছিল, কোনটা ফেল করেছে সেটা নিয়েও কথা বলছিল। বাড়ি ফেরার পর একতা সময় নষ্ট না করে ঘটনার কথা জানান সিএম হেল্পলাইনে (১০৭৬) এবং সিআইএসএফে কর্মরত এক আত্মীয়কেও জানান।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা হয়। নিহতদের মধ্যে একজন তরুণ নৌবাহিনী কর্মকর্তা রয়েছেন, যিনি মাত্র কয়েকদিন আগে বিয়ে করেছিলেন। ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর একজন কর্মকর্তা ছিলেন, যাকে স্ত্রীর সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়। মৃতদের তালিকায় রয়েছেন দুই বিদেশী নাগরিক এবং স্থানীয় দুই বাসিন্দাও। রয়েছেন বাংলার ৩ বাসিন্দা।