প্রথমে কিছু বুঝতেই পারিনি। আচমকাই দেখলাম বৈসরন ভ্যালির নিচ দিয়ে পর পর গাড়ি নামছে পর্যটকদের। অন্যদিক দিয়ে একে একে উঠছে পুলিশের গাড়ি, মিলিটারি ভ্যান, অ্যাম্বুল্যান্স। চারিদিকে সাইরেনের শব্দে তখন কান পাতা দায়। বেলা আড়াইটে নাগাদ জঙ্গিরা হামলা চালায় পর্যটকদের উপরে, আর কিছুক্ষণেই বৈসরন ভ্যালি পৌঁছনোর কথা ছিল, কোনওমতে সেদিন প্রাণে বেঁচেছি। তবে সবকিছুর পরেও রাতে পহেলগাঁওতেই ছিলাম। আলো বন্ধ করে কোনওমতে রাত কাটিয়েছিল আর অপেক্ষা করেছি কখন ভোর হবে। ভয় করছিল যদি কোনওভাবে এবারে রিসর্টে হামলা হয়। এরপর ভোর হতেই পহেলগাঁও থেকে সোজা জম্মুর উদ্দেশ্যে রওনা দিই। ২৩ তারিখই জম্মু পৌঁছই রাতের দিকে। ২৪ তারিখ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাতে জম্মু থেকে ট্রেন ধরেছি বাড়ি ফেরার।
advertisement
বৈসরন ভ্যালি থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে এবিসি ভ্যালি। আরু ভ্যালি, বেতাব ভ্যালি এবং চন্দনওয়ারি, একত্রে এবিসি ভ্যালি। সেই সব ঘুরে বৈসরন ভ্যালি যাওয়ার কথা ছিল। বৈসরন ঘুরতে সময় বেশি লাগে, তাই লাঞ্চ করে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, সেটাই বাঁচিয়ে দিল। তবে স্থানীয়রা ওই সময় খুবই সাহায্য করেছে। এলাকায় যত পর্যটক ছিল, তাদের প্রায় প্রত্যেককেই দোকানের ভিতরে ঢুকে পরার জন্য বারে বারে বলতে থাকে। আমরা প্রায় ভয়ে গুটিয়ে গিয়েছিলাম ঘটনার কথা জানতে পেরে।
এবারের বেড়ানোয় আমাদের ট্যুরের ড্রাইভার ছিলেন সুরিন্দর সিং, জম্মুর বাসিন্দা এই ব্যক্তি আমাদের দিকে সবরকমের সাহাজ্যের হাত বাড়িয়েছিলেন। উনি এক্স মিলিটারি ড্রাইভার ছিলেন, তাই আরও বেশি সিচুয়েশনের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন। উনিই আমাদের একেবারে জম্মু পৌঁছে দেন পহেলগাঁও থেকে। তবে এবারে যে ঘটনার সম্মুখীন হলাম, তা বলার নয়। এত ভয় পেয়েছি সকলে, সারাজীবন মনে থাকবে।