পুজো মানেই বেড়াতে যাওয়া। বাঙালি বেড়াতে ভালোবাসে। জীবদ্দশায় একবার ভূস্বর্গ ঘুরে আসার ইচ্ছে থাকে সকলের। সুনীল আকাশ, হিমবাহ, বরফে মোড়া সাদা পাহাড়, বরফ গলা জলের নদী। হিমালয়ের কোলে ক'টা দিন কাটিয়ে আসার বাসনা সকলের।কিন্তু, যাই বললেই কি আর যাওয়া হয় ! জায়গার নাম যে কাশ্মীর ! সীমান্তের রাজ্য। তাই না বলে কয়ে প্রতিবন্ধকতা আসতে পারে প্রতি মুহূর্তে। যার জেরে ব্যাহত হয় পর্যটন শিল্প।কাশ্মীরের শ্রীনগর শহর থেকে ৮৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এক মোহময়ী উপত্যকার নাম সোনমার্গ। যার আক্ষরিক অর্থ, সোনায় মোড়া তৃণভূমি।
advertisement
হিমালয়ের কোলে ঝিলম নদীর প্রধান উপনদী সিন্ধু নালার একপাশে সোনায় মোড়া ছোট্ট এই উপত্যকার সৌন্দর্য যিনি একবার উপভোগ করেছেন, তিনি সোনমার্গের প্রেমে পড়েছেন। নীল আকাশের নিচে যেন স্বপ্ন আর বাস্তবতার মিলন।কাছেদূরে বরফঢাকা পাহাড়। সিন্ধু নালার ঠান্ডা জল নেমে আসছে পাথরে ধাক্কা খেতে খেতে। তার পথ চলার কলকল শব্দ বারবার টেনে আনবে আপনাকে। কিন্তু কোথায় পর্যটক ? মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন !
আরও পড়ুন - IPL 2021: Dhoni- ধামাকার দিন, আইপিএলে ১০০ ক্যাচ, ছক্কা মেরে জেতালেন দলকে, দেখুন ভিডিও
হোটেল মালিক শাহজাদ রসুল বলছিলেন, "প্রায় বছর সাতেক ধরে সমগ্র কাশ্মীর উপত্যকায় পর্যটক কমেছে। ২০১৪ সালের বন্যার ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই কাশ্মীরের ভাগ্যাকাশে এসেছে বুরহান ওয়ানি-কান্ড। যে ঘটনার জেরে প্রায় বছর দেড়েক কাশ্মীরে পর্যটকের (Kashmir Tourism) তেমন দেখা মেলেনি। তারপর ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামা জঙ্গি হামলা। এই ঘটনার পরেও ভূস্বর্গের পর্যটনশিল্প মুখ থুবড়ে পড়েছিল। কয়েক মাস পরেই সেবছর ৫ আগস্ট সংসদে জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপ করা হয়। এই ঘটনার পর জম্মু-কাশ্মীর (Kashmir) কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। মুখ থুবড়ে পড়ে ভূস্বর্গের ভবিষ্যত।" যদিও এই ঘটনার অনেক আগে থেকেই কার্যত কার্ফু জারি হয়েছিল সমগ্র কাশ্মীর জুড়ে। গৃহবন্দী করা হয়েছিল তাবড় রাজনৈতিক নেতাদের। সেনা ও পুলিশে মুড়ে ফেলা হয়েছিল চতুর্দিক। এই সবের মধ্যেই হানা দেয় চিনা ভাইরাস কোভিড-১৯। সেইসঙ্গে টানা লকডাউন।
শাহজাদ রসুল জানাচ্ছিলেন, "অমরনাথ যাত্রা পথের সূচনা হয় সোনমার্গ থেকেই। সোনমার্গ থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে বালতালে অমরনাথ যাত্রার বেসক্যাম্প হয়। প্রতিবছর মোটামুটি ১৫ ই নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত, ব্যাপক তুষারপাতের কারণে বন্ধ থাকে সোনমার্গ। অতএব যেটুকু রোজগার বাকি ছ মাসে। এখানকার মানুষের রুটি-রুজি নির্ভর করে পর্যটকদের আনাগোনা উপরেই। পাহাড়ি গ্রামের মানুষগুলোর পেট ভরে ভ্রমণপিপাসুদের পরিষেবা জুগিয়ে।" কেউ ট্যাক্সি চালান। কেউ ডাল লেকে শিকারা ভাড়া দেন। কেউ শিকারা চালান। কেউবা পর্যটকদের টাট্টু ঘোড়ার পিঠে চড়িয়ে পাহাড়ি পথের সৌন্দর্য উপভোগ করান। দোকানপাট, ব্যবসা সবই নির্ভর করে পর্যটকদের আনাগোনার উপর। নানা কারণে সেই পর্যটকেরই বড় অভাব বোধ করছে ভূস্বর্গ কাশ্মীর
RAJIB CHAKRABORTY