গত কয়েকমাস ধরেই মাটি বসে যাওয়ার কারণে গোটা যোশীমঠ জুড়ে একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দিচ্ছিল। গত সপ্তাহে এক লাফে অনেকটাই বাড়ে সেই ফাটলের সংখ্যা। ফেটে চৌচিড় হয়ে যায় শঙ্করাচার্য মঠ, এমনকি, চিন সীমান্তগামী গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথও। প্রায় ৭০০টি বিপজ্জনক বাড়ি থেকে বাসিন্দাদের অন্যত্র পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয় প্রশাসন।
ঘর হারা প্রায় ৪ হাজার মানুষ। এখনও বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়ে ৬০০-র ও বেশি বাড়ি। যোশীমঠে গিয়ে পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে এসেছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামি। উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডেকে একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।
advertisement
আরও পড়ুন: স্বপ্নের মতো শহরের আয়ু আর মাত্র কটা দিন! ধ্বংসের পিছনে কারণ জানলে অবাক হবেন
যোশীমঠের বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরের অদূরে চলা NTPC হাইডেল প্রজেক্টের কারণেই মাটি দ্রুত বসে যেতে শুরু করেছে এই পুণ্য শহরে। পাহাড়ে একের পর এক বিস্ফোরণ, টানেল বোরিং মেশিনের কম্পন পরিস্থিতি দ্রুত সঙ্কটজনক করে তুলেছে। এই অবস্থায় এলাকাবাসী দাবি তোলে, আপাতত, যতদিন পর্যন্ত না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, ততদিন যোশীমঠের আশপাশে চলা NTPC-র প্রজেক্ট সহ সমস্ত কাজ বন্ধ রাখতে হবে সরকারকে। এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়ে এবং যোশীমঠের ভঙ্গুর অবস্থার কথা বিচার করে যাবতীয় প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও নিয়েছে পুস্কর সিং ধামির সরকার। সেই মর্মে জারি হয়েছে নির্দেশিকা। এমনকি, বন্ধ রাখা হয়েছে যোশীমঠ-বদ্রীনাথের অল ওয়েদার রোড তৈরির কাজও।
আরও পড়ুন - চার কিশোর-কিশোরী চোখে স্বপ্ন নিয়ে জাতীয় মঞ্চে তলোয়ার হাতে, সাব জুনিয়র ন্যাশানালে বড় পরীক্ষা
কিন্তু, কে তোয়াক্কা করে সেই সরকারি নির্দেশিকাকে। প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাতের অন্ধকারেই টানেল বোরিংয়ের কাজ করছে কেউ। অন্তত, তেমনটাই অভিযোগ তুলছেন যোশীমঠের সাধারণ মানুষ। রাত ২টোর সময় পাথর বয়ে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে আর্থ মুভার-কে। অথচ, দিন হতেই সব চুপ। এর জেরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে না তো, প্রশাসনই বা কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন, প্রশ্ন আতঙ্কিত যোশীমঠবাসীর।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক বছর ধরেই ২.৫ ইঞ্চি করে বসে যাচ্ছে যোশীমঠ ও তার সংলগ্ন এলাকা। এই প্রাকৃতিক ঘটনাকে আরও ত্বরান্বিত করেছে আরও নানা ঘটনা। এর মধ্যে যোশীমঠে উপযুক্ত নিকাশি ব্যবস্থা না থাকাকেও দায়ী করা হয়েছে। দায়ী করা হচ্ছে বিশ্ব উষ্ণায়নকেও।